মানিকগঞ্জে কোভিডে মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশ শেষ ২৭ দিনে

মানিকগঞ্জে চলতি মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এ মাসের ২৭ দিনে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৫ জন, যা জেলায় মোট মৃত্যুর ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ বা অর্থাৎ এক-তৃতীয়াংশ। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, গত বছরের ৫ এপ্রিল জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন। আর ওই বছরের ১৬ মে জেলায় প্রথম করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর করোনার প্রথম ঢেউয়ে জেলায় ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বাড়তে থাকে। তবে তা ছিল খুবই কম। তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ে চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়তে থাকে।

চলতি মাসে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। জেলায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মোট ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু এ মাসের প্রথম ২৭ দিনে করোনায় সংক্রমিত হয়ে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ হিসাবে করোনায় মোট মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশ জুলাইয়ের এই ২৭ দিনে।

এ ছাড়া এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৪ হাজার ৩৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট আক্রান্তের ৪০ দশমিক ২৪ শতাংশ সংক্রমণ ঘটেছে জুলাইয়ের শেষ ২৭ দিনে। এ সংখ্যা ১ হাজার ৭৪৪

মে মাসে জেলায় ১১২ জন করোনায় সংক্রমিত হন। ওই মাসে প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৩-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। জুনে তা বেড়ে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা হয় ২৩৫। জুনের তুলনায় জুলাইয়ে সংক্রমণের হার ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে যায়। জুলাইয়ে ২৭ দিনে ১ হাজার ৭৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

জুলাইয়ে জেলায় কোভিডে মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক। জুলাইয়ের প্রথম ২৭ দিনে করোনায় জেলায় ২৫ জন মারা গেছেন। এর আগে মে মাসে মারা যান ৫ জন এবং জুনে মারা যান ৫ জন।

জেলায় শনাক্ত রোগীর পাশাপাশি উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর হিসাব দেওয়া হলেও উপসর্গে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের হিসাব দেওয়া হয় না। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও হাসপাতালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী করোনার উপসর্গে জেলায় তিন শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব ও সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ প্রথম আলোকে বলেন, চলতি মাসে এ জেলায় করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর হারও বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহারে গ্রামের মানুষের মধ্যে উদাসীনতা রয়েছে। এ কারণে গ্রামে সংক্রমণ বাড়ছে।