শেরপুরে বাঙ্গালী নদী
মামলার আসামিরাই বালু তুলছেন অবাধে
বালু উত্তোলন বন্ধে ইউএনও অভিযান চালাতে গেলে হামলার অভিযোগ ওঠে। সে মামলার তিন আসামি জামিন পেয়ে আবার বালু উত্তোলন করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর হামলা ও তা নিয়ে মামলার ঘটনার পরেও বগুড়ার শেরপুরে বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনার মামলার আসামিরাই আবার বালু উত্তোলন করছেন। এসব বালু বসতভিটা উঁচু করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া ও খামারকান্দির নলডিঙ্গি গ্রামে খননযন্ত্র (শ্যালো মেশিন) বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। গজারিয়া গ্রামে বালু তুলছেন রাজু আহম্মেদ, মো. মিলন ও মো. রুবেল। তাঁরা তিনজনই ইউএনওর ওপর হামলা মামলার আসামি। আর নলডিঙ্গি গ্রামে বালু তুলছেন শফিকুল ইসলাম। স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ দুই মাস ধরে এ দুই গ্রাম থেকে বালু তোলা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের কেউ কেউ এসব বালু কিনে নিচ্ছেন।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে উল্লেখ আছে, পাম্প, ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এই আইন অমান্যকারীরা কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
গত শনিবার এ দুই গ্রামে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দুটি গ্রামই নদীর তীরবর্তী। ফলে নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে গ্রামের আবাদি জমি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গজারিয়া গ্রামের বালু উত্তোলনকারী রাজু আহম্মেদ বলেন, তিনিসহ দুই সহযোগী মিলন ও রুবেল আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। এভাবে বালু উত্তোলন অবৈধ, তা তাঁরা জানেন। স্থানীয় ব্যক্তিরা বালুর ক্রেতা। তাঁদের প্রয়োজনেই এসব বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। মো. মিলন বলেন, বালু তোলার বিষয়ে প্রশাসনের কেউ বাধা দেয়নি।
আর নলডিঙ্গি গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, দুই-তিন দিন আগে তিনি বাঙ্গালী নদী থেকে বালু তুলেছেন। এই নদীর পাশের জমিগুলোও তাঁদের। নিজেদের ব্যবহারের পাশাপাশি অন্য কারও প্রয়োজন হলে এসব বালু বিক্রি করবেন। খননযন্ত্রটি তিনি পাশের ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের মো. মাসুদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছেন।
গত বছরের ৩ অক্টোবর উপজেলার নলডিঙ্গি ও গজারিয়া গ্রামে বাঙ্গালী নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান চালাতে গেলে তৎকালীন ইউএনওর ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। পরে মামলা হয়।
মামলার তদন্ত করছেন শেরপুর থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ২৭ জনের নামে গত ২৭ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মো. মিলন, রাজু আহম্মেদ ও মো. রুবেলের নাম আছে।