সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজের বিরুদ্ধে সাবেক সাংসদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আজ রোববার সকালে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা মৌন মিছিল করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
কর্মসূচিতে সাংবাদিকেরা মামলাটি প্রত্যাহার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি করেছেন। স্মারকলিপিতে মামলাটি প্রত্যাহারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, প্রেসক্লাব ঘোষিত তিন দিনের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ছিল রোববার। নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১১টা থেকে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা প্রেসক্লাবে সমবেত হতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে সেখান থেকে একটি মৌন প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমবেত প্রতিবাদ সভা করেন।
সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের প্রবীণ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম, জেলা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতীন খান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান, পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাবেক সাংসদ খন্দকার আজিজুল হকের দায়ের করা মামলাটির আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। যে সংবাদটির জন্য মামলা করা হয়েছে, সেটি পুলিশের বরাত দিয়ে এবং আটক ব্যক্তির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে করা হয়েছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে মামলাটি হয়রানিমূলক। এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। ১০ আগস্ট পর্যন্ত মামলাটি প্রত্যাহারে সাবেক সাংসদকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে সাংবাদিকেরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
প্রেসক্লাব সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিরাপত্তার চেয়ে হয়রানি বৃদ্ধি করছে। কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ তাঁদের দুর্নীতি ঢাকতে এই আইনের অপব্যবহার করছে। সৈকত আফরোজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটিতেও আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। ফলে আমরা দ্রুত মামলাটি প্রত্যাহার ও হয়রানির হাতিয়ার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি করছি।’
গত ৮ মার্চ খন্দকার আজিজুল হকের পৈতৃক বাড়ি জেলার বেড়া উপজেলার নাটিয়াবাড়ী গ্রামে আমিনপুর থানা-পুলিশ একটি অস্ত্র তৈরি কারখানার সন্ধান পায়। ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাংবাদিক সৈকত আফরোজ ঘটনার সংবাদটিতে গ্রেপ্তার ব্যক্তি সাবেক সাংসদের ভাতিজা বলে উল্লেখ করেন। তাঁর সম্পাদিত পাবনা মেইল টোয়েন্টিফোর ডটকমে ‘সাবেক এমপির ভাতিজার বাড়িতে কারখানা, আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার, আটক ২’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খন্দকার আজিজুল হক সাংবাদিক সৈকত আফরোজের বিরুদ্ধে গত ৯ জুন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন।