মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ফজলুল

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌর শহরের চর ঘাটিনা গ্রামে ফজলুল হক আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষ করছেন
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌর শহরের চর ঘাটিনা গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হক। ২০০১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি জাহাজ তৈরির কারখানায় কাজ শুরু করেন। সেখানে দীর্ঘ এক যুগ কাজ করার পর চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৪ সালে ব্যবসা শুরু করেন। শুরুতে ব্যবসায় লাভ হলেও ২০২০ সালে করোনার থাবায় ক্ষতির মুখে পড়েন।

পরে ওই ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেন ফজলুল হক। রোজগারের জন্য তিনি শুরু করেন কৃষিকাজ। ইউটিউব দেখে ২০২০ সালে নভেম্বর মাসের মধ্যভাগে পরীক্ষামূলকভাবে নিজ গ্রামে বাবার পাঁচ বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ফল ও সবজি চাষ শুরু করেন। তাতে একের পর এক আসতে থাকে সফলতা।

সম্প্রতি চর ঘাটিনা এলাকায় ফজলুল হকের মালচিং পদ্ধতির কৃষি খামারে গিয়ে দেখা যায়, বরই ও পেয়ারাগাছে ঝুলছে ফল। চাষ হচ্ছে উন্নত জাতের টমেটো, পেঁপে, বেগুন। ফজলুল বলেন, মালচিং বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। গাছপালার গোড়া, সবজিখেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে চাষাবাদের পদ্ধতিকে বলে মালচিং। এখন প্লাস্টিক মালচিংয়ের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজারমূল্য ভালো থাকায় তাঁর লাভ হচ্ছে।

ফজলুল হক বলেন, প্রথম অবস্থায় বাবার পাঁচ বিঘা জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন। মালচিং করে উন্নত জাতের তরমুজ, ক্যাপসিকাম চাষ করেন। খরচ হয়েছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে আয় হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। এখন এলাকার ১৩ বিঘা জমিতে একে একে টমেটো, বেগুন, পেয়ারা, বরই চাষ করছেন। তাঁর জমিতে পাঁচজন শ্রমিক কাজ করছেন। খামারের বরই তিনি বাজারে প্রতি কেজি ১০০ টাকা ও পেয়ারা ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। সবজি আর ফল বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন তাঁর পাঁচ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। এ ছাড়া গাছের কলম তৈরি করে বিক্রির উদ্যোগও নিয়েছেন।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন বলেন, আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ অত্যন্ত লাভজনক পদ্ধতি। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয় কৃষকদের এতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।