মাহমুদা হত্যার আসামি এহতেশামুলের জামিন নামঞ্জুর
চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ওরফে ভোলার জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। আজ রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করা হয়।
গতকাল শনিবার ভোরে বেনাপোল থেকে এহতেশামুলকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বিকেলে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের নির্দেশে তাঁর স্ত্রী মাহমুদা খানমকে হত্যা করা হয় বলে জবানবন্দিতে বলেন তিনি। এহতেশামুল আরও বলেন, বাবুল আক্তারের একসময়ের তথ্যদাতা (সোর্স) কামরুল শিকদার ওরফে মুছার নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
কামরুল প্রথমে রাজি না হলে তাঁকে ‘ক্রসফায়ারের’ হুমকি দেন বাবুল আক্তার।
এমনকি কামরুল বিষয়টি এহতেশামুলকে জানালে তাঁকেও ডেকে নিয়ে শাসান সে সময়ের পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল। জবানবন্দি দেওয়ার পর এহতেশামুলকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এহতেশামুলের আইনজীবী কে এম সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার বন্ধের দিন থাকায় জামিনের আবেদন করা যায়নি। রোববার জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তা নাকচ করে দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম। পরদিন তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই চলতি বছরের ১২ মে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। ওই দিন মাহমুদার বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে বাবুলসহ আটজনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। বর্তমানে পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে।
মাহমুদা হত্যাকাণ্ডের পর ২০১৬ সালের ২৭ জুন অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন এহতেশামুল হক। ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি। এদিকে মাহমুদার বাবার করা মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তী জামিন পান এহতেশামুল হক। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে আত্মসমর্পণ করার জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে সময়ের আবেদন করেন তিনি। ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আবেদনটি করা হয়। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ জুলাই আদালত এহতেশামুলসহ তিন আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। অন্য দুজন হলেন কামরুল শিকদার ওরফে মুছা ও মো. কালু। এদিকে বাবুলের করা মামলায় পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় গত বছরের মে মাসে। এটির বিরুদ্ধে বাবুলের আইনজীবী নারাজি আবেদন করেন। ২৭ অক্টোবর নারাজি আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।