২০১৬ সালে কলেজ থেকে ফেরার পথে বখাটেদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ময়মনসিংহের কলেজছাত্র মোতাহসিম বিল্লাহ ওরফে শাকিল (১৮)। হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর হয়ে গেছে, এখনো মামলাটি বিচারাধীন। দীর্ঘ সময়েও বিচার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ মোতাহসিমের পরিবার।
আজ বুধবার দুপুরে মোতাহসিম হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মোতাহসিম বিল্লার মা উম্মে কুলসুম জাহানারা বেগম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোতাহসিমের বাবা এমদাদুল হক ও তাঁর স্বজেনেরা।
সংবাদ সম্মেলনে কুলসুম জাহানারা বলেন, ‘আমাদের একটাই সন্তান ছিল। আরও কেউ নেই। আমার বড় স্বপ্ন ছিল, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের আগেই বখাটেরা আমার ছেলেকে হত্যা করে। আমার বয়স হয়ে গেছে। মারা গেলে কবর দেওয়ার মতো কোনো আপনজন নেই। আমি চাই, ছয় বছর আগে আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, আমি জীবিত থাকতে যেন তাদের বিচার হয়।’
কুলসুম জাহানারা আরও বলেন, মামলার পর তিন আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিন্তু বয়স কম, এমন অজুহাতে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায় আসামিরা। এর পর থেকে বিচার কেবল দীর্ঘায়িতই হচ্ছে। দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে কোনো ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে। এভাবে চলতে থাকলে তাঁর মৃত্যুর আগে ছেলে হত্যার বিচার পাবেন কি না, তা নিয়ে তাঁর মনে সংশয় জেগেছে।
ময়মনসিংহ থানা-পুলিশ ও নিহত মোতাহসিমের পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, মোতাহসিম শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের ছাত্র ছিল। ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি বিকেলে কলেজ থেকে ফেরার সময় পূর্ববিরোধের জেরে কয়েকজন তরুণ ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে মোতাহসিমকে। ২৯ জানুয়ারি নিহতের বাবা এমদাদুল হক বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে মামলা করেন। ৩০ জানুয়ারি তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের ৯ মাস পর বয়স কম থাকায় উচ্চ আদালত থেকে ওই তিনজনসহ আট আসামিই জামিন পায়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
থানা-পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার আগে মোতাহসিম তাঁর বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তখন রয়েল মিডিয়া কলেজের এক শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন মোতাহসিমের বান্ধবীদের উত্ত্যক্ত করে। এ সময় মোতাহসিম ও তাঁর বন্ধুরা বখাটেদের মারধর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। এ ঘটনার জের ধরে মোতাহসিমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়।