‘মোর বাকি জীবনটা পাকা ঘরত কাটের পাইম’
‘মেলা দিন খাকি কষ্ট করি দুই শতক ভিটামাটি কিনছু, কিন্তু ঘর ওঠের পারো নাই। মোর বাপ–দাদা কাও পাকা ঘরত শুতির পারে নাই। ভাঙা ঘরত থাকি মোর জীবনটাও শ্যাশ কালত পইরছে। শেখ হাসিনার সরকার আসি নূর ভাইর দয়াত একটা পাকা ঘর পানু। মোর বাকি জীবনটা পাকা ঘরত কাটের পাইম।’
স্থানীয় সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের সহায়তায় সেমিপাকা ঘর পেয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানান নীলফামারী জেলা সদরের চড়াইখোলা ইউনিয়নের কিসামত চড়াইখোলা গ্রামের দিনমজুর বাছের আলী (৭০)।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে স্মরণসভা, দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের সহযোগিতায় দলীয় এবং অসচ্ছল ২১ জনের মধ্যে ৬ লাখ ২ হাজার ৯০০ টাকার সহায়তা বিতরণ করা হয়।
বাছের আলীর মতোই ঘর পেয়েছেন জেলা সদরের চাপড়াসরমজামী ইউনিয়নের জাদুরহাট গ্রামের মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৫)। দিনমজুর আশরাফুল বাস করতেন অন্যের ভিটায়। তিন বছর আগে ঋণ করে স্থায়ী নিবাসের জন্য কিনেছিলেন চার শতক জমি। ঘর পাওয়ার আনন্দে আশরাফুল বলেন, ‘মোর টিনের চালার ঘরত আকাশের পানি ধর ধর করি পড়ে। বউ-ছাওয়া নিয়া আইতোত ঘুমিবার পারো না। নূর ভাইর দয়াত এলা শান্তিতে ঘুমিবার পারিম।’
অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা একটি পরিকল্পিত ঘটনা। যাঁরা বলেন বিপথগামী কিছু সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে হত্যা করেছে, সেটি সঠিক নয়।’ ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীরা একটার পর একটা ষড়যন্ত্র করেই চলেছে। যার প্রমাণ আপনারা দেখছেন। সিরিজ বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা তারই অংশ।’
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমানের সভাপতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মসফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি রমেন্দ্র বর্ধন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামচরণ রায় প্রমুখ। সভা শেষে শেখানে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান জানান, অনুষ্ঠানে সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের ব্যক্তিগত সহযোগিতায় দুটি পরিবারকে সেমিপাকা ঘর (প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা) দেওয়া হয়। এ ছাড়া একটি রিকশা, একটি বাছুরসহ গাভি, ছয়টি হুইলচেয়ার, দুটি সেলাই মেশিন এবং ঘর মেরামত, চিকিৎসা, ব্যবসাসহ অন্যান্য বিষয়ে নয়টি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।