যেকোনো নির্মাণকাজে সাময়িক যন্ত্রণা আছে: ওবায়দুল কাদের
যেকোনো নির্মাণকাজে সাময়িক যন্ত্রণা আছে এবং তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ শুক্রবার সকালে টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করতে এসে এ আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সড়কটি উত্তরবঙ্গের গেটওয়ে, ময়মনসিংহের দ্বিতীয় রাস্তা। কাজেই এখানে অনেক সমস্যা হয়েছে। মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট করেছে। গাজীপুরের মানুষ কষ্ট করেছেন। আমি বলব, যেকোনো নির্মাণকাজে যন্ত্রণা আছেই। সাময়িক সে যন্ত্রণা সবাইকে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাব। যখন বিআরটি চালু হবে, তখন গাজীপুর থেকে প্রতি ৩৫ মিনিটে ২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করবেন। এটা একটা অপূর্ব সুযোগ, সুবর্ণ সুযোগ।’
এটাই ভোগান্তির শেষ বর্ষা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘প্রকল্পটি মানুষের অনেক ভোগান্তি, অনেক বিড়ম্বনার কারণ হয়েছে। এই সড়কের ড্রেনেজ সিস্টেম অত্যন্ত খারাপ। যে কারণে বর্ষাকালে ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। আশা করি, ভোগান্তির এটাই শেষ বর্ষা। এ বর্ষার পর নিচের দিকে (ড্রেন) তেমন কোনো কাজ নেই। কাজেই এ ভোগান্তির অবসান হবে।’
আগামী বছর ডিসেম্বরে প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৬৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। আশা করছি, অনেক আকাঙ্ক্ষিত, বহু প্রত্যাশিত শেখ হাসিনার অন্যতম মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের সঙ্গে আগামী বছর ডিসেম্বরে বিআরটি প্রকল্পটিও প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করতে পারবেন।’
প্রকল্পটির নকশায় ভুল বা কাজের ব্যাপারে সিটি মেয়রের সঙ্গে সমন্বয় না করার কথা বলছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগে প্রকল্পটি শেষ করতে দেন। এখানে এডিবি ফাইন্যান্স করছে। নকশায় কোনো ভুল থাকলে তারা বারবার রিভিউ করবে, মিটিং করছে। আমি বলছি, প্রকল্পটি চালু হয়ে গেলে আপনাদের এসব কথা থাকবে না। মেয়র হানিফ সেতু নির্মাণের সময় এমন অনেক কথা ছিল—নকশা ভুল, জনগণের ভোগান্তিসহ নানা সমস্যা। এখানেও ভোগান্তির পর সুদিন আসবে।’
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে সড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, সেতু বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার জন্য ২০০৫ সালে করা ২০ বছরের পরিবহন পরিকল্পনার (এসটিপি) আওতায় বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে বাসের আলাদা লেন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটাই বিআরটি প্রকল্প, যা ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পায়। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা না হওয়ায় নতুন করে সময় ধরা হয় ২০২২ সাল। নতুন করে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে ২০১২ সাল থেকেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে।