যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর মাথা ফাটিয়ে সড়কের পাশে ফেলে রাখার অভিযোগ

রংপুরের বদরগঞ্জে স্বামীর লাঠিপেটায় আহত স্ত্রী মিনা বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন
ছবি: প্রথম আলো

যৌতুকের দাবি করে না পেয়ে এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী মাথা ফাটিয়ে দিয়ে সড়কের পাশে ফেলে রেখে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের জমিদারবাড়ি এলাকার পাশে এ ঘটনা ঘটে।

আহত গৃহবধূর নাম মিনা বেগম (২৮)। তিনি বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের আশিকুর রহমানের মেয়ে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মিনা বেগমের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের আশিকুর রহমানের সঙ্গে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার হোসেন আলীর মেয়ে মিনা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে তিনি জানতে পারেন আশিকুরের আগের তিন স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। আশিকুরের সংসারে এসে মিনা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এরপর মিনার পরিবারের কাছে আশিকুর দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু যৌতুক দিতে রাজি না দেওয়ায় শুরু হয় মিনার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। একপর্যায়ে বছরখানেক আগে আশিকুর পুনরায় আরেকটি বিয়ে করে মিনাকে শিশুসন্তানসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। মিনা আশ্রয় নেন বাবার বাড়িতে।

মিনার অভিযোগ, ৯ জানুয়ারি স্বামী আশিকুর তাঁকে ফোন করে নিজ বাড়িতে ডেকে আনেন। এরপর আবার ওই যৌতুকের টাকা আনতে তাঁকে চাপ দেন আশিকুর। রোববার সকালে স্থানীয় এক কবিরাজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে মিনাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সড়কের পাশে ফেলে যান তাঁর স্বামী। এতে মিনার মাথা ফেটে যায়। পথচারীরা রাস্তার পাশে এক নারীকে পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে বদরগঞ্জ থানার পুলিশ সেখান থেকে মিনাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

গতকাল বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনা বেগম বলেন, ‘ও (আশিকুর) একটা অমানুষ, নিষ্ঠুর। সকালে যৌতুকের টাকা আনার জন্য আমাকে চাপ দিয়েছিল। আমি বলেছি টাকা নেই। এরপর আমাকে কবিরাজের বাড়িতে হেঁটে নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ পেছন থেকে আশিকুর লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে আমি রাস্তায় পড়ে যাই। এরপর সে আরও পেটায়। তখন রাস্তা ছিল ফাঁকা। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আর কিছু বলতে পারি না। আমি ওর কঠিন বিচার চাই।’
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাকির মোবাশ্বির বলেন, লাঠির আঘাতে ওই নারীর মাথা ফেটে গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, আশিকুরকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।