রাজশাহীতে ফল ও শাকসবজির জন্য হিমাগার

রাজশাহীর পুঠিয়ায় ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণের জন্য মিনি হিমাগারের উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ। রোববার বেলা তিনটায় জেলার পুঠিয়ার শিবপুরে
ছবি: প্রথম আলো

ফল ও শাকসবজি ৩০ দিন পর্যন্ত হিমাগারে সংরক্ষণ করা যাবে। এ রকম একটি মিনি হিমাগার রাজশাহীর পুঠিয়ায় তৈরি করা হয়েছে। রোববার এই হিমাগারের উদ্বোধন করা হয়েছে।

আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর বাজারে চার টন ধারণক্ষমতার ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণের জন্য মিনি হিমাগার নির্মাণ করা হয়েছে।

এ উপলক্ষে রাজশাহী নগরের সীমান্ত সম্মেলনকেন্দ্র সীমান্ত অবকাশে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের সম্মানিত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী জেলার উপপরিচালক মো. কে জে এম আবদুল আউয়াল। কারিগরি বিষয়ে বক্তব্য দেন প্রকল্পের পরিচালক এস এম হাসানুজ্জামান।

এতে বলা হয়, পরীক্ষামূলক সংরক্ষণের জন্য স্থাপিত এ ধরনের মিনি হিমাগারে আম, টমেটো, ড্রাগন ফল, গাজর ইত্যাদি এবং বিভিন্ন শাকসবজি রাখা যাবে। এটি ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও নাটোরের আহমদপুরে যথাক্রমে আট ও চার মেট্রিক টনের আরও দুটি মিনি হিমাগার স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক হলে আরও হিমাগারের ব্যবস্থা করা হবে।

অনুষ্ঠানে আসাদুল্লাহ একই প্রকল্পে ২০২১-২২ অর্থবছরের পরিকল্পনা উপস্থাপন এবং ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাস্তবায়িত কার্যক্রম পর্যালোচনা শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালা-২০২১-এর উদ্বোধন করেন।

কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র, হর্টিকালচার সেন্টার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, ধান গবেষণা, এসআরডিআই, ফল গবেষণা, গম ও ভুট্টা গবেষণা, লাক্ষা গবেষণা, বিনা, বিএডিসি, বিএমডিএর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ প্রায় ১০০ জন উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বলা হয়, বাংলাদেশ সবজি ও ফল উৎপাদনে পৃথিবীতে রোলমডেল। তবে হিমাগার তৈরি করলে কৃষকেরা ফল ও শাকসবজির অনাকাঙ্ক্ষিত সংগ্রহ–উত্তর ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন। পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। সেই সঙ্গে দেশের পুষ্টি–দারিদ্র্য দূর হবে এবং পরিবারের পুষ্টির সুষমবণ্টন নিশ্চিত হবে।

সভায় বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ফল ও শাকসবজির সংগ্রহ–উত্তর ক্ষতি প্রায় ৫০ শতাংশের ওপরে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। ফল ও সবজির সঠিক সংরক্ষণের অভাবে কৃষক অনেক সময় সঠিক দাম পাচ্ছেন না। ক্ষুদ্র পরিসরে তৈরি হিমায়িত সংরক্ষণাগার এ ক্ষতি লাঘবে অনেক ভূমিকা রাখতে পারবে। কৃষকের আয় বাড়াতে সহায়তা করবে। গ্রামীণ পর্যায়ে মিনি হিমাগার তৈরি করে কৃষিপণ্য সংরক্ষণের বিপ্লব সাধিত হতে পারে। শুধু তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ফল ও শাকসবজির সংরক্ষণকাল প্রায় এক মাস পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।