রাজশাহী নগরে শব্দদূষণবিরোধী অভিযান, জরিমানা
‘হর্ন বাজাবেন না, শব্দদূষণ করবেন না। শব্দদূষণ একটি নীরব ঘাতক।’ রাজশাহী নগরের পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মানমাত্রা অতিক্রমকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে আজ সোমবার অভিযান চালানোর সময় এমন বার্তা-সংবলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়।
অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চারটি বাসের হাইড্রোলিক হর্ন খুলে নিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। নগরের তালাইমারী ও আমচত্বর এলাকায় সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।
রাজশাহীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুমতাহিনা কবির এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন। সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন, নমুনা সংগ্রহকারী নীল রতন সরকার ও রাজশাহী মহানগর পুলিশ সদস্যরা।
অভিযান চলাকালে নগরের তালাইমারীতে রয়েল ডাচ, রাজদূত ও মনোয়ার পরিবহন নামের তিনটি যাত্রীবাহী বাস থামানো হয়। এসব পরিবহনে হর্নের শব্দ ১০০ ডেসিবেলের বেশি পাওয়া যায়।
তালাইমারী এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের ১০০ মিটার এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
তালাইমারীতে আটকানো তিনটি বাস থেকে হাইড্রোলিক হর্ন খুলে নেওয়া হয়। পরে রয়েল ডাচ বাসকে ৫০০ ও অপর দুটি বাসকে ৮০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুমতাহিনা কবির বলেন, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী এই দণ্ড দেওয়া হচ্ছে। বিধিমালার যে ধারা অনুযায়ী দণ্ড দেওয়া হচ্ছে, তাতে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
রাজশাহী এখন বিশ্বের চতুর্থ শব্দদূষণকারী শহর। শব্দের তীব্রতা নিয়ে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপির (২০২২) প্রকাশ করা এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় শব্দের সর্বোচ্চ তীব্রতা ১১৯ ডেসিবেল। আর রাজশাহী শহরে এর মাত্রা ১০৩।
সম্প্রতি স্থানীয় একটি সংস্থার পরীক্ষাতেও এ তথ্যের সত্যতা উঠে এসেছে। এতে রাজশাহী শহরজুড়ে মাত্রাতিরিক্ত ও অসহনীয় শব্দের তীব্রতা পাওয়া গেছে।