রায়হান হত্যা মামলায় বরখাস্ত এএসআই আশেকের জামিন নামঞ্জুর

রায়হান আহমদ
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে পুলিশের হেফাজতে রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি সাময়িক বরখাস্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবদুল মোমেন শুনানির পর এ আদেশ দেন।

এ ছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত পলাতক আসামি আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ শুরুর বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশ না হওয়ায় পরবর্তী শুনানির আগে সেটি প্রকাশের নির্দেশ দেন বিচারক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নওশাদ আহমদ চৌধুরী।

নওশাদ আহমদ চৌধুরী বলেন, অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আশেক এলাহী এর আগেও গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন। সেটিও আদালতের বিচারক নামঞ্জুর করেছিলেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এম এ ফজল চৌধুরী বলেন, বিবাদীপক্ষের আইনজীবী আসামির জামিন আবেদন করেছিলেন। শুনানিতে সেটি নামঞ্জুর হয়েছে। সেই সঙ্গে বিচারক পলাতক আসামি নোমানের অনুপস্থিতিতে মামলার বিচারকাজ শুরুর বিজ্ঞপ্তি আগামী শুনানির আগে পত্রিকায় প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। শুনানির সময় কোনো আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর মামলার শুনানিতে পুলিশ পলাতক নোমানের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কোনো মালামাল না পাওয়ার ব্যাপারে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে প্রধান অভিযুক্ত আকবর ১৩ অক্টোবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান। ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই (সাময়িক বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), ফাঁড়ির টুআইসি পদে থাকা সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।

অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাবন্দী। অভিযোগপত্রভুক্ত ৬ নম্বর আসামি আবদুল্লাহ আল নোমান পলাতক। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয় এবং একমাত্র পলাতক আসামি নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।