রৌমারীতে মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। একটি ধানখেত থেকে প্রথমে পাঁচ মাস বয়সী ছেলের গলাকাটা লাশ ও মাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মা মারা যান। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুন বন্দর হাজিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিশুর মায়ের নাম হাফসা আক্তার (২৫)। তিনি নতুন বন্দর এলাকার মো. সাহেব আলীর স্ত্রী। শিশুটি তাঁদের একমাত্র সন্তান।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকালে বৃষ্টির মধ্যে নতুন বন্দর হাজিপাড়া এলাকায় একটি পুকুরের পাশে ধানখেত থেকে একজন নারীর গোঙানির শব্দ শুনে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা সেখানে গিয়ে একটি শিশুর গলাকাটা লাশ ও পাশে গলাকাটা অবস্থায় শিশুর মাকে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাসহ পরিবারের লোকজন ওই শিশুর মাকে উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটির মা মারা যান। খবর পেয়ে রৌমারী থানা-পুলিশ দুপুরে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে রৌমারী থানায় নিয়ে আসে।
নতুন বন্দর হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুস সবুর জানান, সকালে বৃষ্টির মধ্যে তাঁর স্ত্রী বাড়ির পাশের একটি পুকুরপাড়ে গিয়ে এক নারীর গোঙানির শব্দ শুনতে পান। স্ত্রী দ্রুত বাড়িতে ফিরে বিষয়টি তাঁকে জানালে তিনি সেখানে যান। সেখানে গিয়ে একটি শিশুর গলাকাটা লাশ এবং ওই নারীকে গলাকাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তিনি চিৎকার দেন। তখন আশপাশের লোকজন ছুটে এসে পুলিশকে খবর দেন।
নিহত শিশুর মামা হাশিনুর রহমান বলেন, ‘দেড় বছর আগে উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দা এলাকার বাহাদুর মিয়ার ছেলে সাহেব আলীর সঙ্গে বোন হাফসা আক্তারের বিয়ে হয়। পাঁচ মাস আগে তাঁদের সংসারে এক ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে শিশুটি খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত। গত বৃহস্পতিবার হাফসা শিশুর চিকিৎসার জন্য উকিল বাপ মো. জফিয়ালের সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যান। সেখান থেকে ফিরে আসার পথে বেলা দুইটার দিকে আমার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি।’
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর শিশুটির মা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন। মায়ের লাশ এখনো থানায় এসে পৌঁছায়নি। লাশ এলে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যাবে।