লামায় বনাঞ্চল পোড়ানোর ঘটনায় তদন্ত কমিটির শুনানি রোববার

লামার তিন পাড়ার মানুষের জুমের জমি পুড়িয়ে দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের লামার সরইয়ে তিনটি ম্রো ও ত্রিপুরা পাড়াবাসীর জুমচাষের বনাঞ্চল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আগামীকাল রোববার শুনানি করবে। প্রাকৃতিক বনাঞ্চল পোড়ানো ও জমির মালিকানাসংক্রান্ত বিষয়ে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ও পাড়াবাসীর কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার জন্য শুনানি করা হচ্ছে বলে তদন্ত কমিটির প্রধান জানিয়েছেন। সরই ইউনিয়ন পরিষদে এই গণশুনানি হবে।

গত ২৬ এপ্রিল লামা উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়নের লাংকমপাড়া, জয়চন্দ্রপাড়া ও রেংয়েনপাড়া পাড়াবাসীর ৪০০ একর জুমচাষের বনাঞ্চল থেকে ৩৫০ একর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পাড়াবাসীর ফলদ-বনজ বাগান, ধানের খেত ও গাছ-বাঁশ পুড়ে যায়। তখন থেকে তিনটি পাড়ার ৩৬টি ম্রো ও ত্রিপুরা পরিবার খাদ্যসংকটে পড়ে।

পাড়াবাসীর অভিযোগ, লামা রবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কোম্পানি রাবারবাগান করার জন্য জুমচাষের নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক বনাঞ্চল পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় লামা রাবার কোম্পানির আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে ব্যবস্থাপকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অবশ্য লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা বনাঞ্চল পোড়ায়নি। পুড়ে যাওয়া জায়গাটি ম্রো ও ত্রিপুরাদের নয়, কোম্পানি রাবারবাগান করার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১৯৯৩-৯৪ সালে ইজারা নিয়েছে।

ঢাকার নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে খাদ্যসংকটে পড়া তিনটি ম্রো ও ত্রিপুরা পাড়াবাসীকে শনিবার ত্রাণ বিতরণ করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

বনাঞ্চল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার পর তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসক স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি কেন বনাঞ্চল পোড়ানো হয়েছে এবং পোড়ানো বনাঞ্চলে জায়গার মালিকানা বিষয়ে তদন্ত করবে।

আরও পড়ুন

তদন্ত কমিটির প্রধান ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্তের অংশ হিসেবে শুনানির আয়োজন করবেন। এতে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বনাঞ্চল পোড়ানো ও জমির মালিকানা–সংক্রান্ত তথ্য নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

বান্দরবানে ম্রো-ত্রিপুরাদের উচ্ছেদ চেষ্টার সত্যতা পেয়েছে মানবাধিকার কমিশনআজ শনিবার ঢাকার নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে খাদ্যসংকটে পড়া তিনটি ম্রো ও ত্রিপুরা পাড়াবাসীকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ কেজি চাল, নগদ দুই হাজার টাকাসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের নেতৃত্বে সাংবাদিক রাজীব নুর, কবি শাহেদ কায়েস, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন, ফারহা তানজিল প্রমুখ ত্রাণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন।

ম্রো সোশ্যাল কাউন্সিলের সহসভাপতি খামলাই ম্রো জানিয়েছেন, ম্রো নেতারা পুড়িয়ে দেওয়া জুমচাষের জমি পরিদর্শন ও নগদ এক হাজার টাকা বিতরণ করেছেন।

আরও পড়ুন