লৌহজংয়ে বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা, আহত ২৫
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার ঘোড়দৌড় বাজারে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সমাবেশের পর মিছিল শুরু করলে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। এতে দলটির ২০-২৫ নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় দলটির এক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে পুলিশ বলছে, বিএনপির লোকজনের হামলায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আটক ব্যক্তির নাম মো. আতাউর রহমান। তিনি উপজেলা বিএনপির কর্মী। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজ বেলা ১১টার দিকে উপজেলা বিএনপি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। দুপুর ১২টার দিকে সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন দলের নেতা-কর্মীরা। মিছিলে লাঠিপেটা করে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও বাগ্বিতণ্ডা হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। সাধারণ মানুষের খেয়েপরে টিকে থাকাটা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। মানুষের পক্ষে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা করল। পুলিশের হামলায় আমাদের অন্তত ২০ থেকে ২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের ভয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এমন ন্যক্করজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
পুলিশের দাবি, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে থানার উপপরিদর্শক পরিমল কুমার ও কনস্টেবল আনিছুর রহমান আহত হয়েছেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবি, লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল তায়াবীর নেতৃত্ব মিছিলে লাঠিপেটা করা হয়। জানতে চাইলে ওসি আবদুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, ‘বিএনপির নেতারা বলছিলেন তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভা করবেন। কোনো মিছিল করার কথা ছিল না। কিন্তু সমাবেশ শেষে প্রধান সড়কে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে মিছিলে নামে বিএনপি। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা তাঁদের বাধা দিই। সে সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে থানার উপপরিদর্শক পরিমল কুমার ও কনস্টেবল আনিছুর রহমান আহত হয়েছেন।’
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শাহজাহান খান বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিল। আমাদের নেতা-কর্মীদের কিল-ঘুষি-লাথি মারল। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট। নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য তারা মিথ্যা কথা বলছে।’
সদস্যসচিব হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ওমর ফারুক, সদস্য ইউসুফ আজাদ, জেলা জাসাসের সদস্যসচিব আশরাফ হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।