দৌলতপুরে ইউপি নির্বাচন
শঙ্কায় ভোটাররা, চ্যালেঞ্জ বলছেন থানার ওসি
রোববার দৌলতপুর উপজেলার ১৪টি ইউপিতে নির্বাচন। আওয়ামী লীগের নেতারা নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারার হুমকি দিয়েছেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সাধারণ ভোটাররা। তাঁরা বলছেন, ভোটের দিন কেন্দ্রে গ্যাঞ্জাম (কেন্দ্র দখল, মারামারি) হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং তাঁদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেবেন। ভোট দেওয়ার জন্য তাঁরা উদ্গ্রীব হয়ে আছেন।
নির্বাচন কেমন হবে, এ প্রশ্নের জবাবে সদ্য যোগদান করা দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসানের জবাব, ‘এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ। ভোট সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে যা যা দরকার, তাই–ই করা হবে। যোগদান করার দুই দিন হয়ে গেল, এর মধ্যে ছয় ঘণ্টাও ঘুমাইনি।’
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, রোববার দৌলতপুর উপজেলার ১৪টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যানরা আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। প্রত্যেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতা–কর্মীরা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।
কয়েকজন ভোটার বলেন, এবার দৌলতপুরে ত্রিমুখী যুদ্ধ হচ্ছে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত নৌকার চেয়ে বিদ্রোহীদের মাঠ বেশি দখলে। দলীয় ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় বিএনপিও একটু বাড়তি সুযোগ পাচ্ছে। তবে ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে কে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন, সেটা বলা মুশকিল।
গরু ব্যবসায়ী জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেলে এলাকায় বহিরাগতরা মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে। তবে ভোটের দিন যদি প্রশাসন ঠিক থাকে, তারা কোনো পাত্তা পাবে না। গিরাম (গ্রাম) ভালো রাখতে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। এতটুকুই শুধু চাওয়া।’
তালবাড়িয়া এলাকায় মাঠে কাজ করছিলেন কৃষক শাহারুল ইসলাম। তিনি বললেন, নারী–পুরুষ সবাই ভোট দিতে যাবে। কিন্তু ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
উপজেলার দৌলতপুর, রিফাইতপুর, পিয়ারপুর, হোগলবাড়িয়া, আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিনিধি। তাঁরা বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
এই উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে তফসিল হওয়ার পর থেকেই পাল্টাপাল্টি হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিভিন্ন পথসভায় তাঁদের বক্তব্যে নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মেরে ভোট দেওয়ার হুমকি দেন। এসব মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ওই বক্তব্য লাইভ করেন।