শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাশেদ সরদার উপজেলার পাটানি গাঁও এলাকার বাসিন্দা। তিনি শহরে থেকে রাজনীতি করেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাচ্চু ব্যাপারীর সমর্থক ছাত্রলীগকর্মী সজিব সরদারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হয়। সোমবার সন্ধ্যায় রাশেদ ও তাঁর সমর্থকেরা সজিবকে মারধর করেন। খবর পেয়ে বাচ্চু ব্যাপারীর সমর্থকেরা রাশেদের চাচার বিপণিবিতানে জড়ো হন। তখন রাশেদের সমর্থকেরা ওই ভবনের ছাদ থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তখন বাচ্চু ব্যাপারীর সমর্থকেরা হামলা চালিয়ে ওই বিপণিবিতানের ছয়টি দোকান ভাঙচুর করেন।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাচ্চু ব্যাপারীর ভাই চুন্নু ব্যাপারী পালং বাজারের রিয়াদ প্লাজার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওই ভবনের ছাদ থেকে তাঁকে লক্ষ করে ইট নিক্ষেপ করা হয়। খবর পেয়ে লাঠি, রামদা ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাচ্চু ব্যাপারীর সমর্থকেরা রাশেদের চাচার বিপণিবিতানের সামনে জড়ো হন। তাঁরা পালং বাজার দিয়ে মহড়া দেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে বাজার বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন ও পুলিশ সদস্যরা দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বেলা দুইটার দিকে পালং বাজারের ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে ঝাড়ু নিয়ে মিছিল বের করেন। পালং বাজার বণিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর শেখ বলেন, ‘এভাবে বাজারের মধ্যে সংঘর্ষ, ইট নিক্ষেপ ও অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে থাকেন। ক্রেতারাও বাজারে আসতে ভয় পান। এ কারণে আমরা প্রতিবাদ মিছিল করেছি।’
বাচ্চু ব্যাপারী বলেন, ‘রাশেদ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন। বাজারের ব্যবসায়ীদের বিরক্ত করেন। আমার সমর্থকেরা এর প্রতিবাদ করতেন। এ কারণে তিনি প্রায়ই আমার কর্মীদের মারধর করতেন। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী ও জনতা লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন। আর সোমবার তাঁদের মার্কেটে কারা হামলা চালিয়েছিল, তা আমি জানি না।’
রিয়াদ প্লাজায় গিয়ে রাশেদ সরদারকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর ভাবি কলি আক্তার বলেন, ‘আমাদের ভবন থেকে কেউ ইট নিক্ষেপ করেননি। বাচ্চু ব্যাপারীর সমর্থকেরা বিনা কারণে আমার স্বামী, তাঁর বন্ধু ও ভাশুরের ছেলেকে মারধর করেছেন। এর আগে তাঁরা মার্কেটের দোকান ভাঙচুর করেছেন। তাঁরা আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য বারবার হামলা করছেন।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও নড়িয়া সার্কেল) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সোমবারের ঘটনায় কেউ মামলা করেননি। দুই পক্ষ সমঝোতা করায় আটক চার ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় আজ ওই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। থানায় মামলা করা হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে সাংসদ ইকবাল হোসেন বলেন, দলীয় পরিচয়ে যাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবেন, যাঁরা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।