পদ্মা নদীর পানি বেড়েছে। এতে নড়িয়া-জাজিরা পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের ব্লক নির্মাণের ইয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। নড়িয়ার ঈশ্বরকাঠি এলাকায়
ছবি: সত্যজিৎ ঘোষ

পদ্মা নদীর পানি শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে ওই পয়েন্টে পদ্মার পানি ৪৭৭ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে, যা বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপরে।

পানি বাড়ার কারণে নড়িয়ার ঈশ্বরকাঠি, শেহের আলী মাদবরকান্দি ও চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি এলাকায় নদীর তীর উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। ওই তিন স্থানে নড়িয়া-জাজিরা পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের ব্লক নির্মাণের ইয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে সেখানে কর্মরত তিন শতাধিক শ্রমিককে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পানি বাড়ার কারণে ভাঙন ঠেকাতে পদ্মা, মেঘনা ও কীর্তিনাশা নদীর ১০০ স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

শরীয়তপুর পাউবো ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৩ আগস্ট পদ্মা নদীর পানি নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর থেকে প্রতিদিনই পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নড়িয়ার কিছু নিচু এলাকায় তীর উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে স্রোত বেড়েছে। স্রোতের কারণে জাজিরার পদ্মা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ও কীর্তিনাশার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে জাজিরার ৩৭টি স্থানে, নড়িয়ার ১২টি স্থানে, ভেদরগঞ্জের ২২টি স্থানে, গোসাইরহাটের ১৪টি স্থানে ও সদর উপজেলার কীর্তিনাশা নদীর ১৫টি স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। ওই স্থানগুলোয় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলতে ৩১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয় করছে পাউবো।

নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প নামে একটি প্রকল্পের কাজ চলছে নড়িয়ায়। ১ হাজার ৪১৭ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য সিসি ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে নদীর তীরবর্তী ১০টি স্থানে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঈশ্বরকাঠি, শেহের আলী মাদবরকান্দি ও চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি এলাকায় সিসি ব্লক নির্মাণের তিনটি ইয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। সাত দিন আগে ওই ইয়ার্ড তিনটি বন্ধ করে শ্রমিকদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শরীয়তপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে কিছু নিচু স্থান তলিয়েছে। তবে এখনো লোকালয়ে পানি ঢোকেনি। নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের ব্লক নির্মাণের তিনটি ইয়ার্ড পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সেখান থেকে তিন শতাধিক শ্রমিককে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পানি নেমে গেলে ইয়ার্ড তিনটি চালু করা হবে।

জানতে চাইলে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম প্রথম আলোকে বলেন, ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙন হয়, সেই ভাঙন মোকাবিলা করার জন্য মাঠপর্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আর পানি বাড়ার কারণে নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকার মানুষের যদি কোনো ক্ষতি ও দুর্ভোগ হয়, তাহলে তাদের খাদ্যসহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন পাশে থাকবে।