রংপুর নগরের বেশ কয়েকটি সড়কের নামকরণ মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের নামে করা হলেও নামকরণের সেই ফলকগুলোর অস্তিত্ব নেই। লোকজনকে সেই নাম ব্যবহারও করতে দেখা যায় না। সাড়ে তিন দশক আগে তৎকালীন রংপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ আফজাল এই নামকরণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার সুধীজনের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, অবিলম্বে নগরের রাস্তাগুলোতে নামফলক বসিয়ে বীর শহীদদের নামে নামকরণ বাস্তবায়ন করা হোক।

রংপুর সিটি করপোরেশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৪-৮৫ সালে রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর নামকরণ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নামে করা হয়। সে সময় রাস্তায় নামফলকও লেখা হয়। কিন্তু সময়ের প্রেক্ষাপটে এসব নামফলক কে বা কারা তা নষ্ট করে ফেলে।

এ বিষয়ে রংপুর মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সদরুল আলম বলেন, সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আফজাল রংপুর শহরের প্রধান সড়কসহ অনেকগুলো রাস্তার নামকরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নামে। ওই সময় নামফলক লাগানো হলেও সেগুলো এখন নেই। সিটি করপোরেশনকেই এগিয়ে আসতে হবে এই কাজ করার জন্য।

সিটি করপোরেশন সূত্রে আরও জানা যায়, বর্তমানে নগরের জিলা স্কুলের মোড় থেকে সিটি বাজার পর্যন্ত প্রধান এই সড়কটি শহীদ জররেজ সরণি ও সিটি বাজার থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত সড়কটি শহীদ খোন্দকার মুখতার ইলাহীর নামে নামকরণ করা হয়। নগরের প্রধান ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বেতপট্টি সড়কটির নামকরণ করা হয় শহীদ ওমর আলী সরণি, সেন্ট্রাল রোডটি শহীদ মোবারক সরণি, গোমস্তাপাড়া থেকে পালপাড়া সড়কটি শহীদ রনি রহমান সরণি, দেওয়ানবাড়ি রোড থেকে মুলাটোল যাওয়ার সড়কটি শহীদ অশ্বিনী কুমার ঘোষ সরণি, বেতপট্টি থেকে সেনপাড়ামুখী সড়কটি শহীদ ভিকু চৌধুরী সরণি, স্টেশন রোড থেকে দরদী সিনেমা হলের বিপরীত দিয়ে আজিজনগর কলোনির ভেতরের মূল সড়কটির নামকরণ করা হয় শহীদ চিকিৎসকের নামানুসারে শহীদ মর্তুজা সরণি, কলেজ রোডের মুরগির খামার মোড় থেকে পীরপুর অভিমুখী সড়কের নাম শহীদ ইসমাইল হোসেন বসু মিয়া সরণি, নগরের হনুমানতলায় একটি সড়কের নাম শহীদ রাজ্জাক সরণি, মুন্সিপাড়া কেরামতিয়া স্কুল মোড় থেকে বাস টার্মিনাল যাওয়ার সড়কটি শহীদ মিলি চৌধুরী সরণি নামকরণ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের শহীদদের নামে সড়কের নামকরণের উদ্যোক্তা রংপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ আফজাল বলেন, ‘আমার আমলে পৌরসভার রেজল্যুশনের মাধ্যমে এসব রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল।’

মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় রাস্তা সংস্কারের কারণে হয়তো এসব নামফলক নষ্ট হয়ে গেছে। এরপরও কিছু কিছু নামফলক স্থানীয় লোকজন সংরক্ষণ করেছেন। বর্তমানে বিভিন্ন সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। নতুন করে বীর শহীদদের নামে নামফলক স্থাপন করা হবে।