শিক্ষকদের সম্মানিত করা মানে ‘জাতিকে সম্মানিত করা’

আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে অতিথিরা। রোববার চট্টগ্রাম নগরের নন্দনকাননের ফুলকি মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

‘শিক্ষকদের সম্মানিত করা মানে জাতিকে সম্মানিত করা। শিক্ষকের যথাযথ মর্যাদা দিতে না পারলে দেশের যতই উন্নতি হোক, সেটা টেকসই হবে না। শিক্ষা খাত না এগোলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাও (এসডিজি) অর্জিত হবে না। জাতিকে শিক্ষিত করা, আলোকিত করার কাজটি এগিয়ে নেন শিক্ষকেরা। তাই তাঁদের সম্মাননা দেওয়ার মধ্য দিয়ে জাতি হিসেবে নিজেরাও সম্মানিত হই।’

আজ রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে ‌‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২১’ শীর্ষক আঞ্চলিক সুধী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। নগরের নন্দনকাননের ফুলকি মিলনায়তনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সুধী সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চক্রবর্তী, সাহিত্যিক বাদল সৈয়দ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক হানিফ সিদ্দিকী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিনা আলম চৌধুরী, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তৌফিক সাঈদ, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের চট্টগ্রামের প্রধান অনির্বাণ সরকার ও উদ্যোক্তা আরজেএম ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জসিম আহমেদ।

বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘জাতি হিসেবে অনেক নেতিবাচক দিক আছে, আছে ইতিবাচক দিকও। আমরা কালো হরফে পত্রিকা ছাপিয়ে দিলে আমাদের উদ্দেশ্য ও অর্জন সফল হবে না। এ জন্য দরকার জাতিকে শিক্ষিত করা, আলোকিত করা। কাজটি এগিয়ে নিচ্ছেন আমাদের শিক্ষকেরা।’

বক্তব্যে প্রথম আলোর নানা আয়োজনের কথা তুলে ধরেন বিশ্বজিৎ চৌধুরী।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘শিক্ষকেরা জাতি গঠনের হাতিয়ার। শিক্ষকদের সম্মানিত করা মানে জাতিকে সম্মানিত করা। সমাজের প্রতিটি স্তরে যদি শিক্ষকেরা সম্মান পান, তাহলে জাতি হিসেবে অনেক উঁচুতে থাকবে আমাদের স্থান। শিক্ষকেরা যদি দক্ষ হন, নৈতিকতায় পূর্ণ হন, তাহলে সে জাতি আর পিছিয়ে থাকবে না। যখন শিক্ষার্থীরা আমাদের ছাড়িয়ে যায়, তখন খুব গর্ব অনুভব করি।’

বাদল সৈয়দ বলেন, ‘প্রথম আলোর গণিত অলিম্পিয়াডসহ অনেক কর্মকাণ্ড রয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে ভালো আয়োজন হচ্ছে এই শিক্ষক সম্মাননা। একজন শিক্ষকের জুতাও যদি পরিষ্কার করি, তাহলেও শিক্ষকের ঋণ শোধ হবে না।’

হানিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘সারা দেশে সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বলছে। আমরা শিক্ষিত হচ্ছি, কিন্তু কতজন মানুষ হতে পারছি? অনেক শিক্ষককে আমরা প্রতিনিয়ত হেনস্তা করছি। আমরা অনেক এগিয়েছি। উন্নত হচ্ছি। কিন্তু শিক্ষককে যদি যথাযথ মর্যাদা দিতে না পারি, শিক্ষা খাত না এগোয়, তাহলে এসডিজি অর্জিত হবে না।’
আইনজীবী জিয়াউদ্দিন বলেন, শিক্ষকদের প্রকৃত মর্যাদা ও উপযুক্ত বেতন যদি দিতে না পারেন, তাহলে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসবেন না।

সঞ্জয় বিশ্বাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বন্ধুসভা চট্টগ্রামের সভাপতি তাহমিনা সানজিদা সাহীদ। দর্শক হিসেবে অনুভূতি ব্যক্ত করেন প্রমুগ্ধা লিয়েনা চৌধুরী ও ফাহিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের ওপর দুটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।