শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মানববন্ধন, ছাত্রলীগ নেতাসহ বহিষ্কার ১০

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ফাইল ছবি

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করায় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল হাসানকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে একাডেমিক কাউন্সিল। একই অভিযোগে অপর দুই শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য এবং সাতজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া আট শিক্ষার্থীকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বলা হয়, তদন্তে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী কলেজের হলে থাকতে পারবেন না। এমনকি মেডিকেল কলেজের কোনো সভা–সমাবেশেও অংশ নিতে পারবেন না।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন দেবনাথ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত দুজন হলেন তৃতীয় বর্ষের ফায়াদুর রহমান ও তামান্না তাসমিন। এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন সুনীতি কুমার দাস, সানবীম খান, মাহিদুল হক, তানবিন হাসান, কাশফী তাবরীজ, রাপ্পু কর্মকার ও সাখাওয়াত হোসেন। মৌখিকভাবে সতর্ক করা আট শিক্ষার্থী হলেন মাহমুদুজ্জামান, মেহরাব হোসেন, নাজমুছ সাকিব, রিজবী আল নাহিয়ান, জিম রহমান, সাকিব খান, জেরিন তাসনিম, জিহাদুল হক।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ৫৩ ব্যাচের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সার্জারি বিভাগের এক শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে কলেজে একটি মানববন্ধন হয়। পরে গত রোববার এর প্রতিবাদে মেডিকেল কলেজে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। ওই দিন ৫৩ ব্যাচের সব ছাত্রী উপস্থিত থেকে জানান, তাঁদের কারও সঙ্গে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ছাড়া একাধিক শিক্ষক তাঁদের বক্তব্যে বলেন, কিছু শিক্ষার্থীকে অনৈতিকভাবে পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়।

এর পর থেকে শিক্ষকেরা ক্লাস বর্জন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্তে প্রমাণিত হয়, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল হাসানের নেতৃত্বে বহিষ্কৃত ও মৌখিকভাবে সতর্ক হওয়া শিক্ষার্থীরা মিথ্যা যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেন।

অধ্যক্ষ চিত্ত রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মানববন্ধন করা হয়েছিল, সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এ ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের কয়েকজনকে বহিষ্কার ও বাকিদের সতর্ক করা হয়েছে।