শিবপুরে গেজেট প্রকাশ স্থগিতের দাবি স্বতন্ত্র প্রার্থীর
নরসিংদীর শিবপুরের যোশর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত দুটি কেন্দ্রের পুনরায় ভোট গণনা, একটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার আগে গেজেট প্রকাশ স্থগিতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে নরসিংদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন ওই ইউপির আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন। ৫ জানুয়ারি বুধবার পঞ্চম ধাপে ওই ইউপিতে ভোট গ্রহণ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ফলাফল কারসাজি করে আমাকে পরাজিত দেখিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী দেখানো হয়েছে। সরকারি ঘোষণা করা ফলাফল শিটে ঘষামাজা ও কাটাছেঁড়া করা রয়েছে। শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খান নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে এসব অনিয়মের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের হাতে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, যোশর ইউনিয়নের ভঙ্গারটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নৌকাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ছাড়া বাকি ৭টি কেন্দ্রে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হয়। ওই তিনটি কেন্দ্রে দুপুর ১২টার পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা নিজ কক্ষে বসে নৌকা প্রতীকে সিল মেরেছেন।
এতে আরও বলা হয়, নৌকাঘাটা কেন্দ্রে বেলা পৌনে ৩টার সময় ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়। স্থগিতের কারণ জানতে চাইলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. নূরুল আমিন ওপরের নির্দেশে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয় বলে জানান। পরে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে না জানিয়ে বিকেল ৪টায় কেন্দ্রটিতে আবার ভোট গ্রহণ চালু হয়। পরে ওই কেন্দ্রে ফল ঘোষণা না করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ব্যালট বাক্স নিয়ে চলে যান নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে দুপুর ১২টায় কামালপুর কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে পিটিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভঙ্গারটেক কেন্দ্রে উপস্থিত সবার সামনে ঘোষণা করা ফলাফলে আনারস ১ হাজার ৪৮২ ভোট ও নৌকা ৪২৭ ভোট পায় বলে জানানো হয়। কিন্তু ওই সময় লিখিত ফলাফল না জানিয়ে পুলিশের সহায়তায় ব্যালট বাক্স নিয়ে চলে যান নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট হওয়া ৭টি কেন্দ্রসহ মোট ১০টি কেন্দ্রের আমার এজেন্টদের হিসাবমতে, আমি মোট ৯ হাজার ১৩৮ ভোট পেয়েছি। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৮৯ ভোট। এ ঘটনায় প্রতিকার পেতে আমি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
ইউএনও মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নির্বাচনের সময় সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা রিটার্নিং কর্মকর্তার আওতায় থাকেন। তাই নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওপর আমার প্রভাব বিস্তারের প্রশ্নই ওঠে না। পরাজিত হওয়ার পর যে কেউ সংবাদ সম্মেলন করে নানা অভিযোগ করতে পারেন, তবে আমরা আইনের বাইরে গিয়ে কিছুই করিনি।’
নরসিংদীর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেছবাহ উদ্দিন বলেন, ‘যোশর ইউনিয়নের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই অভিযোগ আমরা নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছি।’