শিমুলিয়া ঘাটে সকাল থেকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে

ঘাটে মোটরসাইকেলের সবচেয়ে বেশি চাপ দেখা গেছে। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শিমুলিয়া ১ নম্বর ফেরিঘাটে
ছবি: প্রথম আলো

ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ততই যাত্রীর চাপ বাড়ছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, অন্য দুই দিনের তুলনায় ঘাটে আজ রোববার যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেশি। বিশেষ করে ঘাটে মোটরসাইকেলের সবচেয়ে বেশি চাপ দেখা গেছে।

ঘাট ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে পাঁচ দিন ধরে ঘরমুখী মানুষের চাপ শুরু হয়েছে। মূলত প্রতিদিন সাহ্‌রির পর ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ পড়তে শুরু করে। তবে গত শুক্রবার বিকেল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত যানবাহনের চাপ সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহম্মেদ আজ বেলা ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ঘাটের অবস্থা অন্য দিনের তুলনায় যানবাহনের ভিড় বেড়েছে। দুই থেকে তিন হাজার মোটরসাইকেল পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। সকাল থেকে ইতিমধ্যে দুই হাজার মোটরসাইকেল ফেরিতে করে পদ্মা পাড়ি দিয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ঘাটে অপেক্ষমাণ। অন্য কয়েক দিন সকালে চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমে যায়। তবে আজকে সকাল থেকে লাগাতার চাপ বাড়ছে।

আজ সকাল ১০টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশপথ শিমুলিয়া-ভাঙা মোড়ে পুলিশের তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। সেখানে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রায় এক কিলোমিটার পথ হেঁটে যাত্রীদের ঘাটে আসতে হচ্ছে। ঘাটে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে যাত্রী ও যানবাহনের জটলা। পার্কিং ইয়ার্ডের মাঠেও গাড়ির জট রয়েছে। ঘাটের সংযোগ সড়কগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

গাড়ির জটলা কমাতে ঘাটে প্রবেশের আগেই ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে গাড়ি আটকে দেওয়া হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা
ছবি: প্রথম আলো

বেলা ১১টার দিকে ঘাটে কথা হয় গোপালগঞ্জগামী ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রী কামাল উদ্দিনের সঙ্গে। ঈদ করতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন তিনি। কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ভোর চারটার দিকে যাত্রাবাড়ী থেকে রওনা দিয়ে সকাল ছয়টার দিকে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছি। ঘাটে এসেই দীর্ঘ সিরিয়ালে পড়েছি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা এখানে বসে আছি। গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে।’

ইভা আক্তার নামের শরীয়তপুরের এক যাত্রী বলেন, ‘ঈদ এলেই গ্রামের বাড়ি যাই। প্রতিবছর ঘাটে এসে এভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সকালে ঘাটে এসেছি। কখন ফেরিতে উঠতে পারব জানি না। এ বছর গরমে ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে।’

শিমুলিয়ার ১ নম্বর ফেরিঘাটে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে। সেখানে এক হাজারের বেশি মোটরসাইকেল পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রচণ্ড গরমে যেখানে সামান্য ছায়া পাচ্ছেন, যাত্রীরা সেখানেই আশ্রয় নিচ্ছেন।

সাইফুল ইসলাম নামের বরিশালের এক যাত্রী বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ির সময় বেশি লাগবে ভেবে তিনি মোটরসাইকেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ঘাটে এসে উল্টো চিত্র দেখছেন তিনি। মোটরসাইকেল নিয়ে ৩ ঘণ্টা ধরে পদ্মা পাড়ি দিতে তিনি ঘাটে অপেক্ষা করছেন।