শেষ মুহূর্তে জমজমাট চট্টগ্রামের পশুর হাট

ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা–বিক্রেতারা। আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের সাগরিকা পশুর হাটে
ছবি: প্রথম আলো

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। চট্টগ্রামে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। ক্রেতা–বিক্রেতারা দর–কষাকষিতে দারুণ সরগরম নগরের পশুর হাটগুলো।

আজ শনিবার দুপুরে সাগরিকা পশুর হাটে গরু কিনতে আসেন বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা নাফিস রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শহরে গরু রাখার জায়গা নেই। তাই ঈদের এক দিন আগেই তাঁরা গরু কেনেন। সাধারণত তাঁরা তিন ভাই মিলে মাঝারি আকারের গরুর কেনেন। গতবার কিনেছিলেন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে। এবার বিক্রেতারা একই রকমের গরুর দাম হাঁকছেন দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।

নাফিস রহমান দুপুর পর্যন্ত গরু কিনতে না পারলেও কর্ণফুলী হাট থেকে ৭৫ হাজার টাকায় ছোট আকারের গরু কেনেন কলেজশিক্ষক আরাফাতুল ইসলাম। আজ সকালে তিনি গরুটি কেনেন। এক ফাঁকে প্রথম আলোকে বলেন, ছোট গরুই প্রতিবছর কেনেন তিনি। তবে এবার দাম একটু বেশি মনে হয়েছে তাঁর।

এবার চট্টগ্রামে তিনটি স্থায়ী ও চারটি অস্থায়ী হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা চলছে। আজ সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত বিবিরহাট, সাগরিকা ও কর্ণফুলী গরুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি পশু সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা। ক্রেতার উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো।

কাজির দেউড়ি থেকে বিবিরহাট বাজারে আসেন সৈয়দ মাহফুজুর রহমান ও তাঁর ভাই সৈয়দ আফজালুর রহমান। তাঁরা ৮৫ হাজার টাকায় একটা লাল রঙের গরু কিনে নেন। এই দুই ভাই বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম বেশি রাখছেন ক্রেতারা।

তবে হাটের গরু ব্যাপারীরা বলছেন, এবার বাজারে সব রকমের পশুখাদ্যের দাম বেশি। একটা গরু পরিচর্যা করতে গতবারের চেয়ে এ বছর ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। তাই কম দামে ছাড়া যাচ্ছে না। মোটামুটি একই কথা বলেন সাগরিকা পশুহাটের ইজারাদার এরশাদ মামুনও। তিনি বলেন, বেচাকেনা গতবারের তুলনায় এখনো কম।

মাদারীপুরের টেকেরঘাট থেকে ছয়টি গরু নিয়ে সাগরিকায় এসেছিলেন সাজ্জাদ আহমেদ। তাঁর মধ্যে ‘ব্ল্যাক টাইগার’ নিয়ে তাঁর মনে বাড়তি উচ্ছ্বাস ছিল। কুচকুচে কালো রঙের গরুটির ওজন ৯ মণের মতো। সাজ্জাদ আশা করেছিলেন, টাইগারকে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। শেষ পর্যন্ত এটি বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকায়। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে সাজ্জাদ প্রথম আলোকে বললেন, প্রত্যাশামতো বিক্রি হয়েছে। সব কটি গরু বিক্রি হয়েছে ১৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকায়।

গোপালগঞ্জ থেকে ছোট ও মাঝারি আকারের ৯টি গরু নিয়ে এসেছিলেন নারায়ণ মণ্ডল। তাঁর সব গরুই বিক্রি হয়ে গেছে। ১৩ লাখ টাকা নিয়ে তিনি রওনা হয়েছেন বাড়ির দিকে। নারায়ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে এবার ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি ছিল। তাঁর সব গরুই বিক্রি হয়ে গেছে আজ।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে এবার ৮ লাখ ২১ হাজার পশুর প্রয়োজন হবে।