শ্যামনগরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আরও ১ জনের মৃত্যু
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সাবেক ও বর্তমান দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল কাদের (৪৮)। গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
কাদেরের বাড়ি উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামে। এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে একই গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষ মিলিয়ে অন্তত ২৩ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে আমির হোসেন (২৮) নামের একজনকে শ্যামনগর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। আবদুল কাদেরের অবস্থা তখন সংকটাপন্ন ছিল।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ বলেন, দুজনের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনায় আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
নিহত আমির আলী ও আবদুল কাদের স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল বারীর সমর্থক ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আবদুল বারীর সমর্থক নাদের আলীকে মারধর করেন বর্তমান ইউপি সদস্য আবদুল হামিদের লোকজন। ওই ঘটনার জেরে বিকেলে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বারীর কর্মী–সমর্থকেরা হামিদের লোকজনকে গালিগালাজ করেন। এ সময় দুই পক্ষ বাদানুবাদে জড়ালে মুহূর্তের মধ্যে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের শ্যামনগর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা আবদুল বারীর ভাতিজা ও টেংরাখালী গ্রামের আমির হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আবদুল কাদের (৩৬) ও আবদুস সোবহান (৫০) নামের দুজনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আবদুল কাদের।
সংঘর্ষের বিষয়ে বর্তমান ইউপি সদস্য আবদুল হামিদ বলেন, বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর কর্মী–সমর্থকেরা প্রতিপক্ষের লোকজনকে ধাওয়া দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় তাঁর এক ছেলেসহ ১২ কর্মী আহত হয়েছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল বারী বলেন, নির্বাচনের পর থেকে একের পর এক তাঁর কর্মী–সমর্থকদের হামিদের লোকজন মারধর করেছে। আগের দিন নাদের নামে তাঁর এক সমর্থককে মারধরের ঘটনার প্রতিকার চাইতে গেলে হামিদ সুন্দরবনের আত্মসমর্পণ করা বনদস্যুদের নিয়ে হামলা করেন। হামিদ ও তাঁর দুই ছেলে ধারালো অস্ত্র ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেন বলেও আবদুল বারী অভিযোগ করেন।