শ্রীবরদীতে বেঞ্চের নিচে মিলল সিল মারা ব্যালট পেপার

ইউপি নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের দুই দিন পর শেরপুরের শ্রীবরদীর একটি কেন্দ্র থেকে বিপুল পরিমাণ সিল মারা ব্যালট পেপার জব্দ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের বাঘহাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসব ব্যালট পেপার জব্দ করা হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক বা গ্রেপ্তার হননি।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের একটি কেন্দ্র ছিল বাঘহাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আজ সকালে ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন) মাখন মিয়া অফিসকক্ষ পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি বেঞ্চের নিচে বিপুল পরিমাণ ব্যালট পেপার দেখতে পান। সেগুলো একটি কাপড়ের মধ্যে প্যাঁচানো অবস্থায় ছিল। এটা দেখার পর তিনি (মাখন) ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ছাবেদ আলীকে খবর দেন। সংবাদ পেয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ছাবেদ আলী ব্যালট পেপারগুলো নিতে ওই বিদ্যালয়ে আসেন। ততক্ষণে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায় এবং স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ে এসে ব্যালট পেপার ও ছাবেদ আলীকে আটক করে রাখেন।

খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয়ে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা আক্তার, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জিল সাদিক, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মো. জিয়াউল হক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাসসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় ইউএনও এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা আক্তারের নির্দেশে ব্যালট পেপারগুলো একটি বস্তায় ভরে সিলগালা করে নিয়ে যাওয়া হয়।

নির্বাচন কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ছাবেদ আলী জানান, রোববার নির্বাচনের পর তিনি ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করে অন্যান্য ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে দ্রুত উপজেলা পরিষদে স্থাপিত নির্বাচন নিয়ন্ত্রণকক্ষে চলে যান। তাড়াহুড়া করায় ভুলবশত ব্যালট পেপারগুলো ফেলে গিয়ে থাকতে পারেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জিল সাদিক ব্যালট পেপার জব্দ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ ভোট গ্রহণকারী অন্য কর্মকর্তাদের আগামীকাল বুধবার তাঁর কার্যালয়ে এসে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। কমিশন থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক হননি বলে জানান তিনি।

ইউএনও নিলুফা আক্তার বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রানীশিমুল ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আবদুল হামিদ ঘোড়া প্রতীকে ৪ হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী মাসুদ রানা পান ৪ হাজার ৩৪৮ ভোট।