শ্রীমঙ্গলে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সুরকার আলম খান
স্ত্রীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সংগীত পরিচালক, অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরকার আলম খান। আজ শনিবার সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের রাধানগর এলাকায় আলম খানকে দাফন করা হয়।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে রাজধানীর শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আলম খান মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
ঢাকার তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই কার্যালয়ে গতকাল বাদ আসর আলম খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁকে শ্রদ্ধা ও শেষবারের মতো বিদায় জানাতে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে হাজির হন তাঁর দীর্ঘদিনের সহযাত্রী ও অনুজ সহকর্মীরা। রাতেই মরদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে রওনা দেন।
মৃত্যুকালে আলম খান দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। আলম খান পপসম্রাটখ্যাত আজম খানের বড় ভাই। ২০১১ সালে আলম খানের ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে দেশ–বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
আলম খান ১৯৭৬ সালে হাবিবুননেসা গুলবানুকে বিয়ে করেন। গুলবানুও একজন গীতিকার। আলম খানের সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে গাওয়া ‘তুমি তো এখন আমারই কথা ভাবছ’ গানটির গীতিকার হলেন গুলবানু। তিনি মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তাঁদের দুই ছেলে আরমান খান ও আদনান খান—দুজনই সংগীত পরিচালক। একমাত্র মেয়ের নাম আনিকা খান।
‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুরকার আলম খান ১৯৪৪ সালে সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার ও মা জোবেদা খানম ছিলেন গৃহিণী। আলম খান ১৯৬৩ সালে রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে ‘তালাশ’ চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেন।
সর্বশেষ এ টি এম শামসুজ্জামান পরিচালিত ‘এবাদত’চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন আলম খান। তিনি মোট সাতবার এ পুরস্কার পান।
আলম খানের সুর ও সংগীত পরিচালনায় সৃষ্ট অসংখ্য গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘চুমকি চলেছে একা পথে, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই,’ ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’ ইত্যাদি।