সহিংসতার শঙ্কা ও নানামুখী অভিযোগ নিয়ে কাল রোববার নওগাঁর মান্দা ও বদলগাছি উপজেলার ২২ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা কোনো অংশেই কম নয়। কারণ, প্রচারণার সময় প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে লাশ পড়া, প্রার্থীর ওপর হামলা ও প্রচারণায় বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে মান্দা উপজেলার কশব ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলুর রহমানের সমর্থকেরা হামলা চালিয়ে বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিছুর রহমানের।
এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার ভালাইন ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফার মোটরসাইকেল বহরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইব্রাহিম আলী মণ্ডলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফার।
এর আগে ১৩ নভেম্বর মান্দার গনেশপুর ইউপিতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হন। এ ছাড়া মান্দার ভারশোঁ, বদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর ও মিঠাপুর ইউনিয়নে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা দেখছেন।
আগামীকাল সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। তৃতীয় ধাপের এই নির্বাচনে মান্দা উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯৩ জন, সাধারণ সদস্যপদে ৫৪৩ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্যপদে ১৭৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বদলগাছির চেয়ারম্যান পদে ৪৮ জন, সাধারণ সদস্যপদে ২৮৪ এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্যপদে ৯৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান জানান, এ ২ উপজেলার ১ হাজার ২১৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১ হাজার ১৫৯টিতে ভোট গ্রহণ হবে। ইতিমধ্যে এসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যালট পেপার, ভোটবাক্সসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এই নির্বাচনে মান্দা ইউপি এবং বদলগাছির পাহাড়পুর ও বদলগাছি সদর ইউপিতে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। বাকি ১৯টি ইউনিয়নে যথারীতি ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে।
পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া জানান, মান্দা ও বদলগাছিতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ২২–২৪ জন আনসার ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে আইনশৃঙলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ দল ও প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স টহলরত থাকবে।