সখীপুরে কৃষিজমি দখল করে ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের সখীপুরে লাবীব গ্রুপের বিরুদ্ধে কৃষিজমি দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন। ঘোনারচালা এলাকা, সখীপুর, টাঙ্গাইল, ২৩ জানুয়ারি দুপুর
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় কৃষিজমি দখল করে ভরাট করার প্রতিবাদে লাবীব গ্রুপের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে। ঢাকা-সাগরদিঘী সড়কের উপজেলার ঘোনারচালা এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে স্থানীয় ভুক্তভোগী শতাধিক কৃষক অংশ নেন।

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন চলাকালে ওই সড়কের দুই পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে, আন্দোলনকারীরা চলে যান। পরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, কারখানা স্থাপনের জন্য লাবীব গ্রুপ নামের একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান উপজেলার কালিয়াপাড়া ঘোনারচালা মৌজার বিভিন্ন দাগে প্রায় ৩৫ একর কৃষিজমি ক্রয় করেন। ওই স্থানটিকে লাবীব গ্রুপের মালিকের নাম অনুসারে ‘আলমগীর নগর’ নামকরণ করে একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আলমগীর নগর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক ভুয়া দলিলের মাধ্যমে সাত-আট একর জমি ক্রয় করে দখল করেছেন। এ ছাড়া কিছু জমির মালিক লাবীব গ্রুপের কাছে জমি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের জমিও দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেককে মামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

একই ধরনের অভিযোগ করেন ওই এলাকার বাসিন্দা মো. লিয়াকত হোসেন, নুরুজ্জামান, মোশারফ হোসেন, মাহমুদ আল শাহীন, আছিয়া ও জয়তন।
ওই এলাকার কৃষিজমি আবাদের জন্য পানি সেচের দুটি গভীর নলকূপ রয়েছে। নলকূপের মালিক মজিবর রহমান ও খালেক মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, লাবীব গ্রুপ জমি কেনার পর মাটি দিয়ে ভরাট করায় ও পানির ড্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক কৃষিজমি পতিত রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৫০ শতাংশ জমিতে ইরি বোরো আবাদ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাবীব গ্রুপের প্রতিনিধি সখীপুর ঘোনারচালা আলমগীর নগর রেঞ্জের প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক বলেন, ‘আমরা লাবীব গ্রুপের পক্ষ থেকে গত পাঁচ-ছয় বছরে পর্যায়ক্রমে উপজেলার ঘোনারচালা এলাকায় প্রায় ৩৫ একর জমি ক্রয় করেছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বৈধ মালিকদের কাছ থেকেই জমি ক্রয় করা হয়েছে। আমরা ওই জমি দখল করিনি। এমনকি ওই কৃষিজমিতে মাটি ভরাট করে ঘাস আবাদ করেছি।’

তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় শাহ আলম ও শফিকুলের কাছ থেকে প্রায় এক একর জমি কিনলেও তাঁরা আমাদের জমি বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। এমনকি আমাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুণ্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চিত্রা শিকারী প্রথম আলোকে বলেন, কারও জমি দখল করলে তাঁরা দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে পারবেন। এ ছাড়া কৃষিজমিতে কেউ মাটি ভরাট করলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।