সঙ্গী হারিয়ে সিংহ পরিবারে অস্থিরতা

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে বেষ্টনীতে সিংহ টুম্পা ও রাসেল। গতকাল সকালে
প্রথম আলো

পার্কের পূর্ব কোনার ৭৫ একর জায়গাজুড়ে সিংহবেষ্টনী। এই বেষ্টনীর ভেতরে টুম্পা, রাসেল, সম্রাট আর নদী নামের সিংহগুলোর বসবাস। কদিন আগেও তারা মিলেমিশেই দিন কাটাত। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। একে অপরের সঙ্গে খুনসুটির পাশাপাশি চলছে আক্রমণ, ঝগড়াঝাঁটি। এ চিত্র কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের।

এ অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে গত ২৩ ফেব্রুয়ারির পর থেকে। সেদিন বেষ্টনীর জ্যেষ্ঠ বাসিন্দা সোহেলের মৃত্যু হয়।

সোহেল নামের সিংহটি মারা যাওয়ার পর অন্যরা প্রায় সময় একে অপরের ওপর আক্রমণ করছে।

দুই বছর ধরে সিংহগুলোর দেখভালের দায়িত্বে আছেন পার্কের প্রাণিসংরক্ষক আকতার হোসেন (৫০)। তিনি বলেন, সোহেলের মৃত্যুর পর থেকে এ সিংহগুলো অন্য রকম হয়ে গেছে। সম্ভবত ‘অভিভাবক’–এর চলে যাওয়া এরা (সিংহ) সহ্য করতে পারছে না। প্রায় সময় একে অপরের ওপর আক্রমণ করছে। তাতে আঘাতপ্রাপ্তও হচ্ছে।

চার বছর বয়সে ২০০৪ সালে সোহেল নামের সিংহটিকে সাফারি পার্কে আনা হয়েছিল। এরপর সোহেলের সঙ্গী হিসেবে আনা হয় হীরা নামের সিংহীকে। এদের সংসারে আসে রাসেল নামের সিংহটি। এটির বয়স এখন ১৫ বছর। রাসেলকে রেখে বেষ্টনীতেই মারা যায় হীরা। এরপর সোহেলের সঙ্গী হয় নদী (১৫)। সোহেল–নদীর সংসারে আসে টুম্পা ও সম্রাট নামের দুই সন্তান। টুম্পার বয়স ১০ আর সম্রাটের ৯।

সোহেলের বয়স হয়েছিল ২২ বছর। সোহেলের মৃত্যুর পর রাসেল, সম্রাট, টুম্পা ও নদীর আচরণে পরিবর্তন দেখছেন পার্কের কর্মীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিংহবেষ্টনীতে গিয়ে দেখা গেছে, দর্শনার্থীদের তেমন চাপ নেই। বেষ্টনীর ভেতরে টুম্পা ও রাসেল ঘোরাঘুরি করছে। মাঝেমধ্যে দুজনে দৌড়ঝাঁপ করছে।

সোহেলের মৃত্যুর পর সঙ্গীহীন হয়ে পড়ে নদী নামের সিংহটি। পার্ক কর্তৃপক্ষ নদীর সঙ্গী হিসেবে কক্ষে থাকছে দিয়েছে নদীর গর্ভে জন্ম নেওয়া সম্রাটকে। কিন্তু সময়টা দুজনের ভালো যাচ্ছে না। প্রায় সময় নদীর ওপর আক্রমণ করে বসে সম্রাট। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নদীর পেটে কামড় বসিয়ে দেয় সম্রাট। তাতে অসুস্থ হয়ে পড়ে নদী। এরপর থেকে নদীকে রাখা হয়েছে পৃথক আরেকটি কক্ষে।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, সোহেলের মৃত্যুর পর সিংহগুলো খারাপ আচরণ করছে।