সময়মতো প্রণোদনার টাকা না দেওয়ায় ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে বিক্ষোভ
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাকালে সেবা দেওয়া চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয়দের প্রণোদনা দিতে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সেই টাকা বণ্টন না করায় বরাদ্দের একটি অংশ ফেরত চলে গেছে। এ অবস্থার জন্য হাসপাতাল পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে দায়ী করে বিক্ষোভ করেছেন হাসপাতালের নার্স, ওয়ার্ড বয় ও কর্মচারীরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাঁরা পরিচালককে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে রোগীদের সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
আজ বুধবার সকালে হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আবদুল জলিলের হস্তক্ষেপে এবং আগামী ১০ দিনের মধ্যে ব্যাংক হিসাবে যে টাকা অবশিষ্ট আছে, তা দেওয়ার আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। নার্সরা মো. সাইফুর রহমানকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাঁর নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
হাসপাতালের নার্স ও ওয়ার্ড বয় অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব আফসানা আক্তার বলেন, যাঁরা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়েছেন, তাঁদের জন্য গত বছরের জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে সরকার ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে প্রতিদিন চিকিৎসকদের জন্য ১ হাজার ৮০০, নার্সদের জন্য ১ হাজার ২০০ ও ওয়ার্ড বয়দের ৮০০ করে টাকা দেওয়ার কথা। যেসব নার্স এক মাস কাজ করেছেন, তাঁদের ১৫ দিনের জন্য এ প্রণোদনার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু সেই টাকা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের না দিয়ে পরিচালকের খামখেয়ালিপনায় ব্যাংকে ফেলে রাখা হয়। ৯ মার্চ প্রণোদনার টাকার মধ্যে এক কোটি টাকা ফেরত চলে যায়।
এ বিষয়ে পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, প্রণোদনার টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই তাঁরা একটি কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির তথ্যের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠানো হলে সেখান থেকে জানানো হয়, প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। এ খবরেই কিছু স্টাফ বিক্ষোভ করেন। প্রণোদনার যে টাকা ফেরত গেছে, তা আনার জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখবেন। আর যে টাকা আছে, তা দ্রুতই প্রদান করবেন। সময়মতো না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তালিকা প্রণয়ন করতে করতে দেরি হয়ে গেছে। যে টাকা ফেরত চলে গেছে, তা দ্রুত ফেরত আসবে বলে তিনি আশা করছেন।
এ বিষয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ফরিদপুর জেলা কমিটির সভাপতি আবদুল জলিল বলেন, ‘বিক্ষোভের খবর পেয়েই আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে ১০ দিনের সময় নেওয়া হয়েছে। তাঁরা সবাই কাজে ফিরে গেছেন।’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের পরিচালক অবরুদ্ধ হওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন। তিনি বলেন, পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে।