নড়াইলে ইউপি নির্বাচন
সাংসদ ও আ.লীগের নেতার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ করেন সাংসদ।
আর সাংসদের বিরুদ্ধে নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ করেন সাধারণ সম্পাদক।
নড়াইল-১ (কালিয়া-নড়াইলের একাংশ) আসনের সাংসদ বি এম কবিরুল হক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান সংবাদ সম্মেলন করে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আসন্ন কালিয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে দলের বর্ধিত সভায় চেয়ার ভাঙচুর ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটার পর তাঁরা পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। সাংসদ বি এম কবিরুল হক জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য। আগামী ২৮ নভেম্বর এ উপজেলায় ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন–বাণিজ্যের অভিযোগ করেন সাংসদ। এদিকে সাংসদ বি এম কবিরুল হকের বিরুদ্ধে কালিয়ায় সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ করেন নিজাম উদ্দিন খান।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বিকেলে কালিয়া পৌর কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত সভা ডাকা হয়। সেখানে ব্যানারে ও আমন্ত্রণপত্রে সাংসদে নাম না থাকায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। সভা সঞ্চালনা করছিলেন কালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ। সভার শুরুতে সাংসদ বি এম কবিরুল হক সেখানে উপস্থিত হয়ে মঞ্চের সামনে দর্শক সারিতে বসেন। কৃষ্ণপদ ঘোষ মাইকে সাংসদকে মঞ্চে আসন গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। তখন সাংসদ তাঁর ওপর উত্তেজিত হন। কৃষ্ণপদ ঘোষের সঙ্গে সাংসদের কথা-কাটাকাটি হয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে চেয়ার ভাঙচুর হয়। দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। মঞ্চ ছেড়ে নেতারা যাঁর যাঁর মতো চলে যান। পণ্ড হয়ে যায় সভা। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় সাংসদের বিরুদ্ধে নিজাম উদ্দিন খান নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সাংসদ বি এম কবিরুল হকের নেতৃত্বে বর্ধিত সভায় হামলা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
গতকাল দুপুরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন সাংসদ বি এম কবিরুল হক। তিনি বলেন, ‘আমি হতবাক হয়েছি, নিজাম উদ্দিন খান দলের দায়িত্বশীল পদে থেকে কীভাবে একজন দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ এনে সাংবাদ সম্মেলন করলেন। নিজাম উদ্দিন খান এবং কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হারুন অর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ লাখ লাখ টাকা নিয়ে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন–বাণিজ্য করছেন। নিজাম উদ্দিন খানের আয়ের উৎস কী? তিনি কীভাবে শানশওকতে চলেন? নিজাম উদ্দিন খান নড়াইল-১ আসনে সাংসদ হওয়ার স্বপ্নে বিভোর।’
এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে নিজাম উদ্দিন খান বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরিবেশ নষ্ট করতে সাংসদ কবিরুল হক বর্ধিত সভায় হামলা করেছেন। তিনি এভাবে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটান। কালিয়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে দাঙ্গা-হাঙ্গামার পেছনে সাংসদের ইন্ধন রয়েছে।’