সাতক্ষীরা করোনা হাসপাতালে আরও ১০ জনের মৃত্যু

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন নারী রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮৬। আর করোনা শনাক্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের।

সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরায় ৫ জুন থেকে লাগাতার লকডাউন চলছে। টানা ৩৩ দিনের লকডাউনেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বাড়ছে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এক মাসে করোনা উপসর্গ নিয়ে ১২২ ও করোনা শনাক্ত হয়ে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ১ থেকে ৭ জুলাই মাত্র এক সপ্তাহে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৪৬ ও করোনা শনাক্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে আজ বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আরও ১১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৩৪। জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৫৪। এর মধ্যে ২ হাজার ৮৩৬ জন সুস্থ হয়েছেন।

সাতক্ষীরায় ৫ জুন থেকে লাগাতার লকডাউন চলছে। টানা ৩৩ দিনের লকডাউনেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বাড়ছে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা জয়ন্ত সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিল ২৬ দশমিক ১। বর্তমানে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪২। এর মধ্যে ৩৩ জন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১ হাজার ৯ জন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আজ সকালেও শহরে বিপুলসংখ্যক মানুষকে চলাচল করতে দেখা গেছে। গণপরিবহন ছাড়া অন্যান্য গাড়ি কমবেশি চলছে। বড় বিপণিবিতানগুলো বন্ধ থাকলেও অন্যান্য দোকানের শাটারের একাংশ খোলা রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট আসার আগেই সংকেত পেয়ে শাটার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বাজারে সকালে এ চিত্র দেখা গেছে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়ত বলেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে না। করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। লকডাউন শুরুর কয়েক দিন কার্যকর হলেও পরে শিথিল হয়ে যাচ্ছে। মানুষ সচেতন না হলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।

৪টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা উপহার

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করোনা ডেডিকেডেট সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারটি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা (এইচএফএনসি) দিয়েছে আকিজ বেকার্স লিমিটেড। আজ বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা সার্কিট হাউস মিলনায়তনে আকিজের নতুন ব্র্যান্ড বেকম্যানসের ব্যানারে ‘বেকম্যানস করোনা ওয়ারিয়র্স’ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে এসব দেওয়া হয়।

আকিজ বেকার্স লিমিটেড করোনা ডেডিকেডেট সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চারটি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা দিয়েছে। বুধবার দুপুরে
প্রথম আলো

এইচএফএনসি বিতরণ অনুষ্ঠানে বেকম্যানসের বিভাগীয় বিপণন কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির, জেলা সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াত, হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ।

আজিজ বেকার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মানুষের পাশে দাঁড়াতে তাদের এ উদ্যোগ। করোনায় হটস্পট খুলনার ১০ জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা অন্যতম। ‘বেকম্যানস করোনা ওয়ারিয়র্স’ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে তারা ৬০টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ঢাকা, খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরায় দিচ্ছে।