সাবনূরের মেডিকেলে ভর্তির টাকা দিলেন জেলা প্রশাসক
দরিদ্র দিনমজুরের মেয়ে মোসা. সাবনূর মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও পড়াশোনার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছিল। তবে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কল্যাণে প্রাথমিকভাবে সেই শঙ্কা দূর হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান সাবনূরের ভর্তির খরচ বাবদ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন।
এ ছাড়া নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় কয়েক গণ্যমান্য ব্যক্তি সাবনূরের পড়াশোনার খরচ চালাতে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল সোমবার ‘মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় সাবনূর’ শিরোনামে প্রথম আলোর অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ‘অটুট লক্ষ্যে এমন সাফল্য’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সাবনূরের সাফল্য ও মেডিকেলে ভর্তির খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা তুলে ধরা হয়। সাবনূরকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর অনেকেই তাঁর ভর্তি ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন তাঁর কার্যালয়ে সাবনূরকে ডেকে নিয়ে মেডিকেলে ভর্তির খরচ বাবদ ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন। এ ছাড়া নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হক সাবনূরকে নগদ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। পাশাপাশি মেডিকেলে পড়াশোনার খরচ দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া প্রথম আলোর প্রতিবেদন পড়ে একাধিক ব্যক্তি সাবনূরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করার কথা বলেছেন।
সাবনূর বলেন, মেডিকেলে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল। প্রথম আলোকে ধন্যবাদ। প্রথম আলোতে খবর প্রকাশের পর অনেকে ফোন করে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। পাশে থাকার সাহস জুগিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক ও উপজেলা চেয়ারম্যান ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ বাবদ নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন।
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার জলাবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ কামারকাঠি গ্রামের দিনমজুর বাবুল মোল্লার মেয়ে মোসা. সাবনূর। ২০১৯ সালে সাবনূর স্থানীয় কামারকাঠি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি ও ২০২১ সালে স্বরূপকাঠি শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ৭৩ দশমিক ৫ স্কোর নিয়ে জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
সাবনূরের বাবা বাবুল মোল্লা হাঁপানির রোগী। মাঝেমধ্যে দিনমজুরের কাজ করেন। মা সাবিনা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। সপ্তম শ্রেণি থেকেই টিউশনি করিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে আসছেন সাবনূর।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গণমাধ্যমে সাবনূরের কথা জানতে পারি। এরপর সাবনূরের মেডিকেলের ভর্তির যাবতীয় খরচ আমি দিয়েছি। ভবিষ্যতেও তাঁর পড়াশোনার জন্য জেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।’