সাবেক চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা, গ্রেপ্তার ২

মানিক সরদার
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের কালকিনিতে কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদারকে (৪০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী সীমা খানম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় এ মামলাটি করেন।

মামলায় আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ওরফে মিলন সরদারসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে উত্তর কোলচরী সস্তাল এলাকার মৃত তাজিমউদ্দিন ঢালীর ছেলে মকবুল ঢালী (৪৮) ও রাজারচার এলাকার অনুকূল মুনশির ছেলে অসীম মুনশিকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত মানিক সরদার কালিনগর এলাকার আলমগীর সরদারের ছেলে। তিনি কালকিনি উপজেলা কৃষক লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও মৎস্যজীবী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।

এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত আটটার দিকে মানিক সরদারের মুঠোফোনে একটি ফোন আসে। পরে তিনি মোটরসাইকেলে করে কালকিনি সদরের উদ্দেশে রওনা হন। পালরদী নদীর পাড়ে পৌঁছানোর পর দুর্বৃত্তরা তাঁর গতিরোধ করে দেশি অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। মানিকের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। মানিককে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মানিক সরদারকে দাফন করা হয়। জানাজা শেষে তাঁর সমর্থকেরা সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালান। হাফিজুরের ঘরসহ ১২টি ঘর ও একটি ইটভাটায় আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট চার ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

দ্বিতীয় ধাপে কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহিদ পারভেজের সমর্থক ছিলেন নিহত মানিক সরদার। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সরদার। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে হাফিজুর রহমানের সঙ্গে মানিকের বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরে হাফিজুরের নির্দেশে মানিককে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ নিহত ব্যক্তির স্বজনদের।

মানিক সরদারের স্ত্রী ও মামলার বাদী সীমা খানম বলেন, ‘আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের কাছে দাবি, অভিযুক্ত সব আসামিকে যেন দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আশফাক বলেন, কৃষক লীগ নেতা মানিক সরদার হত্যাকাণ্ডে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবার রাতে সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য ইউনিয়নজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।