সাবেক পৌর মেয়র সহিদুরের জামিন আবেদন আবার নামঞ্জুর

সহিদুর রহমান খান

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খানের জামিন আবেদন আজ বৃহস্পতিবার আবার নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এ নিয়ে ১৫ বারের মতো তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলেন আদালত।

সহিদুর রহমান সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খানের ভাই ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ আতাউর রহমান খানের ছেলে। ৯ মাস ধরে তিনি কারাগারে। গত ১৮ আগস্ট সকালে অসুস্থ হওয়ার পর তাঁকে জেলা কারাগার থেকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

টাঙ্গাইলের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান জানান, টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বৃহস্পতিবার ছিল ফারুক হত্যা মামলার ধার্য তারিখ। রাষ্ট্রপক্ষ মামলার সাক্ষী পুলিশের কনস্টেবল হারুন অর রশিদকে হাজির করে। কিন্তু মামলার অন্যতম আসামি সহিদুর রহমান হাসপাতালে থাকায় তাঁকে হাজির করা হয়নি। তাই সাক্ষ্য গ্রহণও হয়নি।

সহিদুরের আইনজীবীরা তাঁর জামিন আবেদন করেছিলেন। তাঁরা যেকোনো শর্তে সহিদুরের জামিন প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মাসুদ পারভেজ আবেদন নামঞ্জুর করেন। আগামী ১১ অক্টোবর এই মামলার সাক্ষী গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বুকের ব্যথা নিয়ে সহিদুর হাসপাতালে ভর্তি হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। তবে থাইরয়েড ও কিডনিতে কিছু সমস্যা পাওয়া যায়। হাসপাতালে থাকতেই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিন দিন আগে তিনি করোনামুক্ত হন। কোমরব্যথার জন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থেকে গত ২ ডিসেম্বর সহিদুর টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। তার পর থেকে তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারা হেফাজতে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর কলেজপাড়া বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সাংসদ আমানুর রহমান খান, তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খানের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আত্মগোপনে চলে যান। সাংসদ আমানুর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। তাঁদের অন্য দুই ভাই এখনো পলাতক।