করোনার টিকার প্রথম ডোজ বন্ধের সময়সীমা ঘোষণার পর ঢাকার সাভারে টিকাকেন্দ্রে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্ট (বিআইএইচএম) কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে তিন স্বাস্থ্যকর্মীসহ পুলিশের লাঠিপেটায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিআইএইচএম কেন্দ্রে টিকা নিতে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে নারী-পুরুষের আলাদা সারি তৈরির জন্য ও টিকা নিয়ে বের হওয়ার জন্য বাঁশ দিয়ে আলাদা রাস্তা করা হয়েছে। সকাল আটটার পর কিছু সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ধীরে ধীরে মানুষের উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। এ সময় টিকা নিতে আসা অনেকেই বের হওয়ার রাস্তাটিতে অবস্থান নেন। এর মধ্য দিয়েই শুরু হয় বিশৃঙ্খলা।
এ ছাড়া সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত টিকাপ্রত্যাশীরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর জোর করে টিকাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা বাধা দেন। বাধা উপেক্ষা করে প্রবেশ করতে চাইলে তাঁদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ সময় ভিড়ের মধ্যে পড়ে ও লাঠিপেটায় তিন স্বাস্থ্যকর্মীসহ অন্তত আটজন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ভিড়ের কারণে অনেকেই টিকা নিতে পারেননি বলে জানা গেছে।
টিকা নিতে আসা সাভারের ব্যাংক কলোনির আহসান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘একবার এসে ভিড় দেখে ফিরে গিয়েছিলাম। আবার এসে টিকা নিয়েছি। আমার মতো অনেকেই ফিরে গেছেন টিকা না নিয়ে। বাসা কাছে, তাই আমি আবার এসে টিকা নিতে পেরেছি।’
সাভারের বাজার রোড এলাকার বাসিন্দা নূরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আর টিকা দেওয়া হবে না, এই ভয়ে হাজার হাজার মানুষ আজ টিকা নিতে এসেছেন। টিকা দেওয়ার এ জায়গা ছোট। যদি বড় কোনো জায়গায় টিকা দেওয়া হতো, তাহলে এই চাপাচাপি হতো না।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, শুধু এই একটি কেন্দ্রে আজ ১৮ হাজারজনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। রুটিন কেন্দ্র হিসেবে যেখানে ৯০০ টিকা দেওয়ার কথা ছিল। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৮ হাজারজনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। মানুষজন টিকা নিতে আসায় তাঁরা খুশি।
টিকা নিতে আসা মানুষেরা শৃঙ্খলা রক্ষা করলেই সুন্দরভাবে টিকা দিতে পারবেন উল্লেখ করে সায়েমুল হুদা বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ টিকাদান কর্মসূচি চলবে। সবার সুবিধার্থে আমিনবাজার, বিভিন্ন স্কুল, ইপিজেডসহ কিছু কারখানা ও অন্যান্য জায়গায় টিকাদান কর্মসূচি চালাচ্ছেন। টিকাকেন্দ্রের পরিস্থিতি ঠিক রাখতে বুধবার থেকে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সারিবদ্ধভাবে যাতে সবাই টিকা নিতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা হবে।