কুমিল্লার বিসিক শিল্পনগরীর সড়কগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় পিচঢালাই উঠে গেছে। বৃষ্টি হলে জমে যায় পানি। গত বৃহস্পতিবার
প্রথম আলো

কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর অর্ধেক সড়ক ভাঙাচোরা। গর্ত ও খানাখন্দে ভরা এসব সড়কে সামান্য বৃষ্টি হলে জমে যায় পানি। আবর্জনা জমে যাওয়ায় নালা দিয়ে পানি বের হওয়ার উপায় নেই। সাড়ে ২১ হাজার ফুট নালা পরিষ্কারের জন্য প্রতিবছর সরকারিভাবে মাত্র ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরী সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা অঞ্চলের শিল্পের প্রসার ও কর্মসংস্থানের জন্য ১৯৬০-৬১ সালে নগরের অশোকতলা এলাকার ৫৪ দশমিক ৩৫ একর জায়গা নিয়ে এ শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে ১৪২টি শিল্প প্লটের মধ্যে ১২৯টি কারখানা চালু আছে। প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এখানে মুড়ি, ময়দা, আটা, চাল, জাল, সুতা, বিস্কুট, চানাচুর, ওষুধ, আটা, অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল তৈরি হয়।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ফরিদ গ্রুপের উত্তর পাশের সড়ক ও পশ্চিম পাশের সড়কে পানি ভরা। আশপাশের অন্তত আটটি কারখানার লোকজন পানির ওপর দিয়ে কারখানায় যাচ্ছেন। সড়কের অনেক জায়গায় পিচঢালাই উঠে গেছে। একই অবস্থা বিসমিল্লাহ মুড়ির কারখানার সামনে। কুমিল্লা ফ্লাওয়ার মিলের সামনে জমে থাকা পানি কালো হয়ে আছে। বিসিকের পশ্চিম দিকের অশোকতলা এলাকার সড়কে পানি জমে আছে। সেখানকার নালা উপচে পানি পড়ছে। আরেকটু পানি বাড়লে তা কারখানার ভেতর ঢুকে পড়বে।

ফরিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বেলাল হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগে কারখানার পাশের সড়কটি কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে তাঁরা মেরামত করেছেন। নালা না থাকার কারণে পানি জমে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। বিসমিল্লাহ মুড়ির মালিক মো. মাহাবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই কারখানার ভেতরে পানি ঢুকে যায়। শুষ্ক মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কারখানার মালিকেরা বলেন, সিটি করপোরেশন ও সরকারকে নির্ধারিত কর দেওয়ার পরও কোনো ধরনের সুবিধা পাচ্ছেন না তাঁরা।

বিসিক কুমিল্লা শিল্পনগরীর ব্যবস্থাপক ও শিল্পনগরী কর্মকর্তা বদিউল আলম বলেন, এখানে ১০ হাজার ৭৫০ ফুট সড়ক আছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ফুট সড়ক ভাঙাচোরা এবং এতে পানি জমে আছে। ২১ হাজার ৫০০ ফুট নালার মধ্যে ১০ হাজার ফুট নালার অবস্থা খুব খারাপ। সরকার সারা দেশের আটটি বিসিক শিল্পনগরীর মেরামত ও পুনর্নির্মাণ প্রকল্প নিয়েছে। কুমিল্লার বিসিকের পুরোনো ভবন ভাঙা, সড়ক মেরামত ও নালা নির্মাণ এই প্রকল্পের মাধ্যমে করা হবে।

বিসিকের কুমিল্লার উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগে বিসিকের নালা পরিষ্কার করার জন্য বছরে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। এক বছর আগে সেটি বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হয়। ১৫ হাজার টাকা দিয়ে একটা কারখানার সামনের নালা পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকের মজুরি বেশি। তিনি আরও বলেন, লাকসাম-আখাউড়া ডাবল রেললাইন তৈরির জন্য বিসিকের লাগোয়া রেললাইনের নিচের কালভার্টের অংশ বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই কারণে এবার পানি নামতে পারছে না। সড়কে ও নালায় পানি জমে আছে। আগে এখানে জাইকা কিছু কাজ করেছে। এখন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কাজ হলে ভোগান্তি কমবে।