সার্জনের পদ শূন্য ৪ বছর, বাসভবন সংস্কার ৪ লাখে

রাজশাহী জেলার মানচিত্র

চার বছর ধরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জনের পদটি শূন্য রয়েছে। নতুন করে সার্জন পদে গতকাল রোববার পর্যন্ত কাউকে পদায়নও করা হয়নি। তাঁর সরকারি বাসভবনেও থাকেন না কেউ। তবে কর্মকর্তা না থাকলেও, সম্প্রতি চার লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনে টাইলস বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।

বাসভবন সংস্কারে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ দিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ে পদায়নের পর একজন ভেটেরিনারি সার্জন সাধারণত আসতে চান না। কারণ, সার্জনের বেতনের অনেকাংশ বাসভবনে থাকার ভাড়া হিসেবে কেটে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সার্জন বাসভবনে থাকতে না চাইলেও, তাঁকে ভাড়া গুনতে হয়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ হলো ভেটেরিনারি সার্জন। গবাদিপশুর চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া তাঁর অন্যতম কাজ। সার্বক্ষণিক এই দায়িত্ব পালন করতে হয় তাঁকে। উপজেলায় ১১৩টি গাভি, ২৭০টি ছাগল, ৯৭টি ভেড়া, ২৮৫টি গরু মোটাতাজাকরণ, ৩২০টি লেয়ার, ব্রয়লার ৩৩০, সোনালি মুরগির ৯৫, হাঁসের ৮৫ ও ২০টি কবুতরের খামার আছে। এসব খামারের প্রাণী ও পাখির বিভিন্ন সমস্যার জন্য পরামর্শ এবং চিকিৎসা দিয়ে থাকেন ভেটেরিনারি সার্জন। গুরুত্বপূর্ণ পদটি ফাঁকা থাকায় প্রত্যাশিত সেবা মিলছে না বলে জানিয়েছেন চারজন খামারি।

ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের শুরুতে পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। এর পর থেকে ওই পদে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। এই সময়ে নিজের দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি ভেটেরিনারি সার্জনের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। তিনি পদটি পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার চিঠি দিলেও, পদটি পূরণ হয়নি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৪ জানুয়ারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদোন্নতিজনিত বদলির আদেশ হয়েছে। ফলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাও উপজেলা ছেড়ে যাবেন। তাঁর জায়গায় এরই মধ্যে আরেক কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হয়েছে। তবে তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় আগামী মার্চে যোগ দেওয়ার কথা।

গতকাল রোববার সকালে ভেটেরিনারি সার্জনের বাসভবনে গিয়ে সংস্কারকাজ চলতে দেখা যায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমান কাজের তদারক করছিলেন। তিনি বলেন, অধিদপ্তর ভবনটির অভ্যন্তরে টাইলস বসানোর জন্য চার লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সে টাকা দিয়ে টাইলস বসানোর কাজ চলছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মুঠোফোনে বলেন, উপজেলা পর্যায়ে ভেটেরিনারি সার্জন যেতে চান না। উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ সরকারি বাসভবনেই তাঁদের অবস্থান বাধ্যতামূলক। বেতনের একটি বড় অংশ বাসাভাড়া বাবদ কেটে রাখা হয়। অথচ সরকারি বাসভবনের বাইরে থাকলে তাঁদের বাসাভাড়া সর্বোচ্চ সাত হাজার টাকা লাগে।