সিংড়ায় চিকিৎসকের মায়ের মামলায় পৌর কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
চাঁদাবাজির মামলায় নাটোরের সিংড়া পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগের নেতা মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সিংড়া থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মাইনুল হাসানের মা রাহেলা বেগমের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে মিজানুর রহমানের স্ত্রীর দাবি, মামলার বাদীর ছেলের (চিকিৎসক) একটি অনৈতিক ঘটনার সালিস করার কারণে তাঁর স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁদাবাজির অভিযোগে রাহেলা বেগম বাদী হয়ে কাউন্সিলর মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সিংড়া আমলি আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে। তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা আছে বলে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। সেই পরোয়ানা বলে সিংড়া থানার পুলিশ কাউন্সিলর মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন এবং আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মিজানুর রহমানের স্ত্রী বলেন, তাঁর স্বামী সিংড়া পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
এদিকে মিজানুরের স্ত্রী নিলুফা বেগমের দাবি, ২০২০ সালে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মাইনুল হাসান ও এক নারীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন স্থানীয় লোকজন। তখন কাউন্সিলর হিসেবে মিজানুর রহমান তাৎক্ষণিক সালিস বৈঠক করে তাঁদের বিয়ে দিয়ে দেন। পরে ওই চিকিৎসক বিয়ে অস্বীকার করলে ওই নারী চিকিৎসক মাইনুলের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এই মামলাও পিবিআই তদন্ত করে। তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা আছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এই ঘটনার আক্রোশে তাঁর স্বামী মিজানুর রহমানকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তাঁর স্বামী সিংড়া পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা মাইনুল বলেন, কাউন্সিলর মিজানুর রহমানের স্ত্রীর বক্তব্য সঠিক নয়। তবে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে একজন নারী মামলা করেছেন এটা সত্য। এর বেশি কিছু তিনি বলতে অপারগতা জানান।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, এ ব্যাপারে তাঁর কোনো বক্তব্য নেই। আদালতের পরোয়ানা বলে কাউন্সিলর মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।