সিলেটের ভূকম্পন নিয়ে অনুসন্ধান শেষ, চলতি সপ্তাহে প্রতিবেদন
সিলেটে দফায় দফায় ভূকম্পনের বিষয়ে টানা তিন দিন অনুসন্ধান চালিয়ে ঢাকা ফিরেছে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) উদ্যোগে গঠিত এ দলটি গত দুই দিনের মতো আজ রোববারও ভূকম্পনের উৎপত্তিস্থলের আশপাশের এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি তাঁরা ভূমিকম্পকালীন বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তও সংগ্রহ করেন।
পাঁচ সদস্যের দলটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট) প্রকৌশলী মো. শাহীনূর ইসলাম। এ দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপক এবং বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার দুজন কর্মকর্তা ছিলেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। ওই সূত্রের তথ্যানুযায়ী, দফায় দফায় ভূকম্পন মানবসৃষ্ট নাকি প্রাকৃতিক, এটাসহ ভূকম্পের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের জন্য বিশেষজ্ঞ দলটি মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান করতে আসে। এ সময় তাঁরা সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি অনেকের সঙ্গে কথাও বলেন।
অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট) প্রকৌশলী মো. শাহীনূর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ শেষে চলতি সপ্তাহেই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলা হবে না।
রোববার সকালে বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কৈলাসটিলা গ্যাস ফিল্ড পরিদর্শন করেন। এরপর ওই দলের তিনজন সদস্য বেলা ১১টার দিকে সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ে গিয়ে ভূমিকম্পকালীন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে দলের সদস্যরা ৭ জুন হওয়া ভূকম্পনে ফাটল ধরা নগরের রাজা জিসি উচ্চবিদ্যালয়ের ভবন পরিদর্শন করেন। অনুসন্ধানকালে তাঁরা আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বিভিন্ন গ্যাস ফিল্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুরে তাঁরা ঢাকার উদ্দেশে সিলেট ত্যাগ করেন।
সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, তাঁদের কার্যালয়ে বিশেষজ্ঞ দলের তিনজন সদস্য এসে ভূমিকম্পকালীন বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।
৭ জুন এবং ৩০ ও ২১ মে সিলেটে মোট আটবার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এসব ভূকম্পনের উৎপত্তিস্থল সিলেটের বিভিন্ন এলাকা। ৭ জুনের ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৮। এর আগে ভূকম্পনের মধ্যে সর্বোচ্চ কম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। প্রথম দফার ভূকম্পনের পর গত ৩১ মে থেকে নগরের ছয়টি বিপণিবিতান ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ১০ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।
পরে সিটি করপোরেশন এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) নগরের ৪২ হাজার ভবনে সমীক্ষা করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার শাবিপ্রবির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকেরা নগরের ঝুঁকিপূর্ণ ছয়টি বিপণিবিতান ও একটি আবাসিক হোটেল পরিদর্শন করেছেন।