সীতাকুণ্ডে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে মারধর করে ব্যালট ছিনতাই, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২৬

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে দুই পক্ষের সংঘর্ষের দৃশ্য। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায়
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র ও বোয়ালিয়াকুল এতিমখানা কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের কারণে এই দুই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। আর বাঁশবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়াকে মারধর করে ব্যালট ছিনতাইয়ের সময় বাধা দিতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ৭ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ২৬ জন।

দুপুর ১২টায় বাঁশবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৪ জন আহত হয়েছেন। তবে কোন দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গুলিবিদ্ধ আজিজুল হক নামের এক ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর উদ্দিন।

একই সময়ে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্র ও আরআর টেক্সটাইল মিল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন এক প্রার্থীর লোকজন। এ সময় ইফরান নামের একজনকে চায়নিজ কুড়ালসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুই পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) জানালার কাচ ভেঙে গেছে।

আরআর টেক্সটাইল মিল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে কর্তব্যরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জুলফিকার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাইরে থেকে কিছু লোকজন এসে কেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা করে। দুর্বৃত্তরা হামলার চেষ্টার সময় চায়নিজ কুড়ালসহ ইফরান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সোনাইছড়ি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এবং ভোট গ্রহণ শুরুর আগে ঘোড়ামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইউপি সদস্য প্রার্থীদের সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চার ইউপি সদস্য প্রার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তাঁরা হলেন ঘোড়ামরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রার্থী মাহবুব আলম, ফোরকান উদ্দিন, সোনাইছড়ি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রার্থী নাসির উদ্দিন ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম।

সীতাকুণ্ডে ৯টি ইউনিয়নের ৯০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়। এর মধ্যে ছয়টি কেন্দ্র ছাড়া বাকি কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, একাধিক প্রার্থীর উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা দুটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট ছিনতাইয়ের কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েকটি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে পুলিশ, বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে।