সীমানা নির্ধারণ করে ধানসিড়ি নদী পুনঃখননের দাবি এলাকাবাসীর

ধানসিড়ি নদী খননে অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকালে রাজাপুরের বাগড়ি বাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ঝালকাঠির রাজাপুরে কবি জীবনানন্দ দাশের স্মৃতিবিজড়িত ধানসিড়ি নদী খননে অনিয়মের অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। একই সঙ্গে সীমানা নির্ধারণ করে নদীটি আবারও খননের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে রাজাপুরের বাগড়ি বাজারসংলগ্ন ধানসিড়ি নদীর তীরে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে ‘উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে স্থানীয় দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

বক্তারা বলেন, দুই যুগ আগেও ধানসিড়ি নদীর প্রস্থ ১২০ ফুট ছিল। দুই পাড়ের জমি ভূমিদস্যুরা দখল করে বসতি স্থাপন করেছে। এখন নদীটির মাত্র ৫৫ ফুট দৃশ্যমান আছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদীর মাটি খনন করে প্রবাহমান জায়গা ভরাট করেছে। এতে নদী সরু হয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রীর ডেলটা প্ল্যান অনুযায়ী, ৬৪ জেলার অভ্যন্তরীণ ছোট নদী ও খাল খনন প্রকল্প নেওয়া হয়। এর আওতায় ধানসিড়ি নদীর সাড়ে ৮ কিলোমিটার ২ বছর মেয়াদে দুই কিস্তিতে পুনঃখননের জন্য প্রায় ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। নদীটির দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার। ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান নদীর মোহনা থেকে দেড় কিলোমিটার বাদ দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খননকাজ শুরু করে। সে সময় ৪ লাখ ১৬ হাজার ৮০৬.৫ ঘনমিটার মাটি খনন করার কথা ছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকার পুরানা পল্টনের আরএবি-পিসি (প্রা.) লিমিটেড ও মৈত্রী (প্রা.) লিমিটেড এক্সকাভেটর যন্ত্র দিয়ে নদীর মাটি কেটে পাড়েই রাখছিল এবং এ কারণে বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে আবার নদীতেই চলে যাচ্ছিল। এ অর্থবছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজাপুরের বাগড়ি এলাকা থেকে নতুন করে নদীটি খনন শুরু করে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খননের নামে খালে রূপান্তরিত করা হয়েছে ধানসিড়ি নদীটিকে। এ নদী আগের প্রবাহমান অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। সীমানা নির্ধারণ করার পর নতুন করে পুরো নদী খনন করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন মঠবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহ জালাল আহম্মেদ, রাজাপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফখরুল ইসলাম খান, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মো. সবুর খান, রাজাপুর সরকারি কলেজের সাবেক জিএস মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার, মঠবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মজিবর রহমান ফকির, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।