সুনামগঞ্জে পাউবো কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল, মাঠে থাকার নির্দেশ

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ধারাইন নদের তীর উপচে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে গোবরির হাওরের বোরো ধান। বুধবার সকাল ১০টার দিকে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জে হাওরের বোরো ফসল কৃষকের গোলায় তোলার আগ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জেলা কার্যালয়ের সব কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক বৃহস্পতিবার রাতে জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজনের সঙ্গে হাওরের পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কালে এসব কথা জানান। এ সময় তিনি সবাইকে মাঠে থেকে ফসল রক্ষায় কাজ করান নির্দেশ দেন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন উপমন্ত্রী এনামুল হক। সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সভা চলে।

সভায় উপমন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হলো। ১২টি উপজেলার জন্য ১২টি টিম করে দেওয়া হবে। কমিটিতে সব শ্রেণির মানুষ থাকবেন। তিনি আগামী এক মাস সবাইকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন

এনামুল হক আরও বলেন, ‘আমি আজ এসে যা শুনলাম, এসব তথ্য যদি সঠিক হয়, তাহলে তাঁর যে শাস্তি দেওয়া দরকার, দেব। এ বিষয়ে কোনো কার্পণ্য আমি করব না। এই পবিত্র রমজানে আমি বলে গেলাম এটা, আপনারা মনে রাখবেন। অনিয়ম-অন্যায় আমরা বরদাশত করি না।’

সভায় অন্যান্যের মধ্যে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. ফজলুর রশিদ, পাউবোর উত্তর পূর্বাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুরে বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে ফসলের ক্ষতি হওয়া জেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওর পরিদর্শন করেন উপমন্ত্রী এনামুল হক।

গত এক সপ্তাহ ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জি থেকে সুনামগঞ্জে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে জেলার নদ-নদী ও হাওরের পানি। ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে জেলার হাওরের ফসল। একের পর এক হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। মানুষ দিনরাত বাঁধে অবস্থান করে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন।

আরও পড়ুন

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ৵মাত্রা প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন। বুধবার পর্যন্ত জেলায় ৯টি হাওরের ৬৪৪ হেক্টর জমির ধান তলিয়েছে।