সুনামগঞ্জে বধ্যভূমিতে মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘দাঁড়াও পথিক’

সুনামগঞ্জে একাত্তরের গণহত্যার ইতিহাস নিয়ে মঞ্চায়িত নাটক 'দাঁড়ায় পথিক' এর একটি দৃশ্য। জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার নৈনগাঁও বধ্যভূমিতে শনিবার রাতে
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা নদীর তীরে নৈনগাঁও এলাকার বধ্যভূমিতে গণহত্যার ইতিহাস নিয়ে নির্মাণ করা নাটক ‘দাঁড়াও পথিক’ মঞ্চস্থ হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় দেশের ৬৪ জেলার ৬৫টি বধ্যভূমিতে গণহত্যার নাটক মঞ্চায়নের অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার রাতে নাটকটির মঞ্চায়ন হয়।

সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তা এবং নাটকের সঙ্গে যুক্ত কলাকুশলীরা লঞ্চে করে সেখানে গিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করেন। খোলা প্রান্তরে মঞ্চায়িত নাটকটি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় তিন হাজার মানুষ উপভোগ করেন। নাটকে দৃশ্যের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়েছে সুরমা নদী, লঞ্চ, খেয়ানৌকা, নদীর তীরে রাখা বালুর স্তূপ, খোলা মাঠ। আলোকসজ্জা, গল্প উপস্থাপনের কৌশল ও ভিন্নতায় পুরো এলাকাটি যেন নাটকের অংশ হয়ে ওঠে।

‘দাঁড়াও পথিক’ নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী। সহযোগী নির্দেশক ছিলেন দেবাশীষ তালুকদার ও দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী।

নাটক শুরুর আগে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সন্ধ্যা সাতটায় নাটক শুরু হয়।

নাটকটির রচয়িতা আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নাটকে গণহত্যার চিত্রের পাশাপাশি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। কত রক্ত, কত ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই গল্প বলা হয়েছে এটিতে। দুজন তরুণ আলোকচিত্রীকে দিয়ে গল্পের শুরু; যাঁরা হাওর–ভাটির এই প্রত্যন্ত গ্রামে ঘুরতে আসেন। সুরমা নদীর এক মাঝি তাঁদের নিয়ে যান নৈনগাঁও বধ্যভূমিতে। একটু ভিন্ন আঙ্গিকে নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের গৌরব আর ত্যাগের গল্প মননে ধারণ করতে বলা হয়েছে নতুন প্রজন্মকে।’

নাটকে অভিনয় করেন হীরেন্দ্র ভূষণ তালুকদার, রুনা শাহীন আরা লেইস, পল্লব ভট্টাচার্য, দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী, দেবাশীষ তালুকদার, সাদিকুর রহমান খান, সামির পল্লব, অমিত বর্মণ, তূর্য দাস, আশীষ বর্মণ, রাজীব রায়, মাহফুজ আলম, তন্ময় চৌধুরী, মো. আমজাদ হোসেন ভূঁইয়া, সোহানুর রহমান, ইখতেখার সাজ্জাদ, শিপা আক্তার, ঝর্ণা আক্তার, নোভা চৌধুরী, মৌলি তালুকদার, প্রমি তালুকদার, মৌমিতা বিশ্বাস, নদী দে, অর্চি নাগ, বন্যা সরকার প্রমুখ।