সুন্দরবনে বাঘের মুখ থেকে সঙ্গীকে ছিনিয়ে আনলেন জেলেরা
বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের তিন জেলে। জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহ করতে একটি খালের পাড়ে নামেন তাঁদের একজন। হঠাৎ করেই বনের ভেতর থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে এসে তাঁর মুখে থাবা মারে। ছিটকে পড়া ওই জেলেকে উদ্ধারে হাতে নৌকার বইঠা ও দা নিয়ে পাড়ে নামেন অন্য দুই জেলে। তখন ওই জেলেকে ছেড়ে দিয়ে বাঘটি কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায়। এরপর গাছে বইঠা দিয়ে আঘাত করে শব্দ সৃষ্টি করে ও বিভিন্ন কায়দায় ভয়ভীতি দেখালে প্রায় ২০ মিনিট পর বাঘটি বনের ভেতর চলে যায়।
গতকাল রোববার বিকেলে সুন্দরবনের কৈখালী ফরেস্ট স্টেশনের দারগাং খালের পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই জেলের নাম আবু হায়াত ঢালী (৪৫)। তাঁর সঙ্গী অন্য দুই জেলে হলেন বাবলু সানা ও নূর ইসলাম গাজী। আবু হায়াতকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর মুখ ও গলায় তিনটি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। তবে তিনি সুস্থ আছেন।
বাবলু সানা প্রথম আলোকে বলেন, খালের পাশে নামার সঙ্গে সঙ্গে বাঘ আবু হায়াতের মুখে থাবা মারে। তখন তাঁরাও বইঠা আর দা নিয়ে বাঘকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। এরপর বাঘটি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর ভয় পেয়ে বনে ঢুকে যায়। গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে তাঁকে লোকালয়ে আনা হয়। এরপর আজ সোমবার সকালে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা রাজু ইসলাম জানান, আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাঘের আক্রমণে আহত আবু হায়াত ঢালীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর মুখ ও গলার তিন স্থানে ক্ষত হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ ব্যাপারী বলেন, বাঘের আক্রমণের শিকার আবু হায়াত ঢালীসহ তিনজন গত ২৯ জানুয়ারি মাছ ধরার পাস (অনুমতি) নিয়ে সুন্দর বনে যান। তাঁদের মধ্যে একজন বাঘের হামলার শিকার হন। তাঁকে আজ সকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।