সেই আলী আনছারের পরিবারে পাশে দাঁড়ালেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী

আলী আনসারের পরিবারের সদস্যদের ঈদ উপহার পৌঁছে দেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী। সোমবার রাতে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কালিকাপ্রসাদ গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

গত বছর ঈদে বাড়ি আসতে গিয়ে ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে পদদলিত হয়ে মারা যান আবদুল আলী আনছার নামের সদ্য–কৈশোর–পেরোনো এক শ্রমিক। ঈদের উৎসব বিষাদে পরিণত হয় পরিবারটির। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এ বছরের ঈদেও পরিবারে আনন্দ নেই। এ নিয়ে গত রোববার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘সেই আলী আনছারের পরিবারে এবারও ঈদ নেই’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

খবরটি নজরে আসে স্থানীয় সাংসদ (শরীয়তপুর-২) ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমের। তিনি পরিবারটির খোঁজ নেন। পৌঁছে দেন ঈদের উপহার হিসেবে নতুন কাপড়, খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ। গতকাল সোমবার চাঁদরাতে নড়িয়া উপজেলা ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতারা আলী আনছারের মা–বাবার হাতে উপমন্ত্রীর উপহারসামগ্রী পৌঁছে দেন। উপমন্ত্রী তাঁর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত বেগম আশ্রাফুন্নেছা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আলী আনছারের দুই শিশু ভাই-বোনের পড়ালেখার দায়িত্ব নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। বোনটির বয়স ৮ বছর, ভাইয়ের বয়স ১০ বছর।

আলী আনছারের পরিবারের দুর্দশার খবরটি পড়ে মন খারাপ হয়ে গেছে। তাৎক্ষণিক তাঁদের খোঁজ নিয়েছি। আমরা তাঁদের পাশে আছি। দুই শিশুর পড়ালেখার দায়িত্ব আমরা নেব।
এ কে এম এনামুল হক শামীম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কালিকাপ্রসাদ গ্রামের নির্মাণশ্রমিক গিয়াস উদ্দিন ও নাছিমা বেগম দম্পতির ছেলে আলী আনছার। অভাবের সংসারের হাল ধরতে শিশু বয়সেই ঢাকার মীর হাজিরবাগে একটি পর্দার কারখানায় কাজ শুরু করেন তিনি। গত বছরের ১২ মে ঈদের ছুটিতে গ্রামে আসতে গিয়ে ফেরিতে পদদলিত হয়ে মারা যান তিনি। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে এ দুর্ঘটনায় আলী আনছারের সঙ্গে আরও চার যাত্রী প্রাণ হারান।

উপমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলী আনছারের পরিবারের দুর্দশার খবরটি পড়ে মন খারাপ হয়ে গেছে। তাৎক্ষণিক তাঁদের খোঁজ নিয়েছি। ঈদ উদ্‌যাপনের জন্য উপহারসামগ্রী, খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ঈদের পরে পরিবারের সদস্যদের আমার সঙ্গে দেখা করার কথা বলেছি। আমরা তাঁদের পাশে আছি। দুই শিশুর পড়ালেখার দায়িত্ব আমরা নেব।’

আলী আনছারের মা নাছিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটি ছিল সংসারের নয়নমণি। ছেলে নেই, কোনো কিছুই ভালো লাগে না। অভাবের সংসারে ছেলে হারানোর কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছিল। এলাকার এমপি আমাদের কষ্টের কথা জেনে খোঁজ নিয়েছেন, উপহার দিয়েছেন, সহায়তা করেছেন। দুই ছেলেমেয়ের পড়ালেখার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছেন। আমরা এখন কিছুটা স্বস্তি ও ভরসা পাব।’