সেতু নেই, রশি টেনে খেয়া পারাপার
নদীতে একটি সেতু নির্মাণের দাবি বহু দিনের, কিন্তু সেতু হয় না। বর্ষায় প্রবল স্রোতে নদী পার হতে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। এ কারণে এলাকার মানুষ নদীতে আড়াআড়িভাবে একটি রশি টানিয়ে রেখেছেন। ঝুঁকি কমাতে ওই রশি টেনে খেয়ায় নদী পারাপার চলে।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর আলীপুর-টেংরাটিলা এলাকায় এভাবেই মানুষ খেয়া পারপার হচ্ছে ১০ বছর ধরে। বিশেষ করে বর্ষায় শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে বেশি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকার খাসিয়ামারা নদীর পূর্ব পাড়ে টেংরাটিলা বাজার ও পশ্চিম পাড়ে আলীপুর গ্রাম। নদীর আলীপুর এলাকায় নদীপাড়ের মানুষের যাতায়াতের জন্য খেয়া আছে। পূর্ব পাড়ে আছে টেংরাটিলা উচ্চবিদ্যালয়। নদীর পশ্চিম পাড়ের গ্রামগুলোর শিক্ষার্থীরা নদী পার হয়ে ওই স্কুলে যায়। আবার একইভাবে মানুষ যাতায়াত করে টেংরাটিলা বাজারে। এই নদী হয়ে বর্ষায় উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামে। তখন নদীতে প্রবল স্রোত হয়। এতে নদী পারাপারে ঝুঁকি বাড়ে। ঝুঁকি কমাতে স্থানীয় লোকজন নদীর দুই পাড়ে রশি টানিয়ে রাখেন। এই রশি টেনেই খেয়ায় পারাপার হয় মানুষ।
আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন, খাসিয়ামারা নদী পারাপারে এলাকার অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এমনিতে এখানে সারা বছর খেয়ায় লোকজন পারাপার হয়। কিন্তু বর্ষায় স্রোত বেশি থাকায় দুই পাড়ে একটি রশি টানানো হয়, যাতে নৌকা স্রোতের তোড়ে অন্যদিকে চলে না যায়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ জরুরি।
গ্রামের আরেক বাসিন্দা ইসহাক মিয়া বলেন, ‘১৫ বছর ধরে শুনছি, এখানে একটি সেতু হবে। কিন্তু সেতু আর হয় না। মানুষের ভোগান্তিও কমে না।’
গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, এলাকার কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থী নদী পারাপার হয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। বর্ষায় যখন ঝড়-বৃষ্টি বেশি থাকে, তখন অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের নদী পারাপার নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন।
ওই নদীতে খেয়া পারাপারে যুক্ত মাঝি মুজিবুর রহমান বলেন, ‘১০ বছর ধরে এই নদীতে নৌকা চালাই। বর্ষায় নদীতে স্রোত বেশি থাকলে ভয় করে। তখন রশি ধরে নৌকা টেনে নিয়ে এপার-ওপার করি। না হলে স্রোতে নৌকা ভাটির দিকে চলে যায়।’
সুনামগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, খাসিমারা নদীর আলীপুর এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলে এখানে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।