স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেন আদালত
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় কৃষিজমির ক্ষতি করে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বালু ব্যবসা করার ঘটনা স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পবন চন্দ্র বর্মণের আদালত ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন।
গত মঙ্গলবার প্রথম আলোয় ‘কৃষিজমির ক্ষতি করে চেয়ারম্যানের ব্যবসা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি এ আদেশের কপি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ মাটি উত্তোলন বন্ধ করতে বলা হয়েছে। মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ৩১ আগস্ট প্রতিবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আদালতের বিচারক বলেন, সরকারি নীতিমালায় তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও মাটি উত্তোলনে বিধিনিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, মাধবপুর উপজেলার কাষ্টি নদীর পাশে মাল্লা-ধনকুড়া হাওর অবস্থিত। এ হাওরের প্রায় ১০০ একর জমি নিয়ে মাটির বাঁধ তৈরি করেন উপজেলার বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম। এ বাঁধের চারপাশ ঘিরে খাল তৈরি করেন। তাতে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন (খননযন্ত্র)। পাইপের সাহায্যে ওই স্থান থেকে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নোয়াপাড়া এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তরল মাটি।
সেখানে গড়ে উঠছে বেশ কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো স্থাপনে ব্যবহার করা হচ্ছে হাওরের এসব মাটি। চেয়ারম্যান সামসুল এ মাটি সরবরাহের ঠিকাদারির দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এ খননকাজ শুরু করেন। গত সোমবার পর্যন্ত এ মাটি উত্তোলন করতে দেখা যায়।
কৃষকেরা বলছেন, স্থানীয় দুই গ্রামের মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এ হাওরে চেয়ারম্যানের তেমন কৃষিজমি নেই। কিন্তু তিনি কৃষকদের বলেন, ধানের চেয়ে মাটি ব্যবসায় আয় বেশি। কিছু কৃষক তাঁর কথামতো মাটি ব্যবসায় এলেও অনেক কৃষক আসেননি। যাঁরা আসেননি, তাঁদের জমিতে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে এবং প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ১০০ একর জমিজুড়ে বাঁধ তৈরি করেন চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় এলাকাবাসী মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত সোমবার লিখিত অভিযোগ দেন।