স্বামীর লাশ কবর দিতে নিয়ে গিয়ে ধরা খেলেন গৃহবধূসহ ছয়জন
গাজীপুর থেকে স্বামীর লাশ ময়মনসিংহে গ্রামের বাড়িতে কবর দিতে নিয়ে গিয়ে ধরা খেয়েছেন গৃহবধূসহ ছয়জন। লাশের গায়ে আঘাতের চিহ্নের জেরে আজ রোববার দুপুরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের উজান চরনওপাড়া যাদুয়ার চর গ্রামে তাঁদের আটক করা হয়।
নিহত যুবকের নাম দেলোয়ার হোসেন (২৮)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্ত্রী হলেন হাজেরা আক্তার (২৩)।
যাদুয়ার চর গ্রামের বাসিন্দা রতন মণ্ডল বলেন, দেলোয়ার হোসেন গাজীপুরে শ্রমিকের কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী হাজেরা আক্তার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। গতকাল শনিবার রাতে দেলোয়ার তাঁর মা মিনু খাতুনকে ফোন করে রোববার বাড়িতে আসবেন বলে জানান। কিন্তু আজ ভোরবেলায় হাজেরা তাঁর শাশুড়িকে ফোন করে জানান, দেলোয়ার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা ১১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাজেরা তাঁর স্বামীর লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ সময় স্বজনদের কান্নার রোল পড়ে। গ্রামের লোকজন লাশের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। এসব কিসের চিহ্ন, সে বিষয়ে হাজেরা যথাযথ উত্তর দিতে পারেননি। হাজেরার সঙ্গে আসে পাঁচজন স্বজনের কথাবার্তাও ছিল সন্দেহজনক। পরে গ্রামবাসী হাজেরাসহ ছয়জনকে আটক করেন। খবর পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানা-পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে সন্দেহ আরও বাড়ে। পুলিশ ছয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। দেলোয়ারের লাশও থানায় নেওয়া হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম বলেন, লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। দেলোয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের সনদ দেখাতে পারেননি স্ত্রী হাজেরা। তাঁর বক্তব্যের মধ্যেও অসংগতি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল কাদের মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায়। মামলা হলে সেখানে হবে। সংশ্লিষ্ট থানায় ঘটনাটি জানানো হয়েছে। আটক ছয়জনকে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ আজকের মধ্যে গ্রহণ না করলে কাল সোমবার সকালে তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।